২৪ ঘণ্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১০

দেশে আবারও করোনা ভাইরাসে মৃত্যু দেখা দিলো। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং নতুন করে শনাক্ত হয়েছে আরও ১০ জন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আবারও সচেতনতার আহ্বান জানাচ্ছেন।
২৪ ঘণ্টার কোভিড আপডেট: মৃত্যু ১, শনাক্ত ১০
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১০ জন। শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা বিষয়ক নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ০২ শতাংশ।
দেশব্যাপী মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৫১৯ জনে। আর দেশে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫২ হাজার ৭৩ জনে।
চলতি বছরের পরিসংখ্যান ও অগ্রগতি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫২৮ জন এবং মারা গেছেন ২০ জন।
গতকাল মৃত ব্যক্তির বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। তিনি রাজধানী ঢাকার একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
দেশে এখন পর্যন্ত করোনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫৭ লাখ ৩১ হাজার ২৪১টি। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
প্রথম শনাক্ত থেকে আজ
২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম তিনজন করোনা রোগী শনাক্ত হন। এরপর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। সেই থেকে দীর্ঘ সময় ধরে দেশ লড়েছে করোনা মহামারির বিরুদ্ধে।
২০২১ সালের আগস্ট মাসে করোনার সর্বোচ্চ মৃত্যু রেকর্ড করা হয় — ৫ ও ১০ আগস্ট দিনে ২৬৪ জন করে মৃত্যুবরণ করেন।
একসময় ব্যাপক ভ্যাকসিনেশন, সামাজিক দূরত্ব, ও সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে করোনা নিয়ন্ত্রণে এলেও মাঝে মাঝে আবারও কিছু সংক্রমণের ঢেউ লক্ষ্য করা যায়।
জনস্বাস্থ্য বিশ্লেষকদের উদ্বেগ ও পরামর্শ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। এটি থেকে মুক্ত থাকতে হলে এখনো সচেতন থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, প্রয়োজন হলে মাস্ক পরা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা ও হালকা উপসর্গ দেখা দিলে করোনা পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
“যদিও সংক্রমণের হার তুলনামূলক কম, তবে প্রতিটি মৃত্যুই আমাদের জন্য সতর্ক সংকেত।” — জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মাহমুদ হাসান
তিনি আরও বলেন, “বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্ট দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশেও কোনো সময়ে সেটি প্রভাব ফেলতে পারে। তাই স্বাস্থ্যবিধি ও ভ্যাকসিন আপডেট রাখা জরুরি।”
ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা
করোনা থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অনেকটাই উন্নত হয়েছে। তবে হঠাৎ করে শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি নিশ্চিত করা জরুরি।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আগামী দিনে সংক্রমণের আরেকটি ঢেউ এড়াতে হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে স্বচ্ছ তথ্য সরবরাহ, গণসচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রতিনিয়ত নজরদারিতে রাখতে হবে।
সারসংক্ষেপ
গত ২৪ ঘণ্টার করোনা আপডেট আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, ভাইরাস এখনো বিদ্যমান। যদিও সংক্রমণ ও মৃত্যুহার আগের তুলনায় অনেক কম, তবুও প্রতিটি সংখ্যা একটি বার্তা বহন করে—সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই।
তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়: দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কি পরবর্তী ঝুঁকির জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত?
এম আর এম – ০০৭৩, Signalbd.com