২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে নতুন করে ১৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এসময়ে কেউ মারা যাননি। শনাক্তের হার ৪.৬১%। চলতি বছর এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৯ জন এবং মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১৮।
দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আবারও আলোচনায়। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, তবে মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ।
ঘটনা ও ঘোষণার বিস্তারিত
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত করোনা আপডেট বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত মোট ৪১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১৯টি রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছেন ৫১৮ জন। মৃত্যুর সংখ্যা ১৯, যার বেশিরভাগই নারী। সর্বশেষ সোমবার তিনজনের মৃত্যুর পর আজ কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজকের আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, ১৩ জনই চট্টগ্রামের বাসিন্দা। বাকিরা বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে রয়েছেন — ঢাকা, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও রাজশাহীতেও একজন করে আক্রান্ত হয়েছেন।
মহামারির ধারা
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এরপর দীর্ঘ তিন বছর ধরে করোনার ভয়াবহতা সমাজ ও অর্থনীতিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।
২০২২ সালের পর সংক্রমণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেলেও মাঝে মাঝে কিছু সময় সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে মাঝে মাঝেই দৈনিক কিছু রোগী শনাক্ত হলেও তা তুলনামূলকভাবে কম।
বর্তমান পরিস্থিতির বিশ্লেষণ
যদিও সাম্প্রতিক সংক্রমণ সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রোগ প্রতিরোধে গাফিলতি করলে সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, আক্রান্তদের বেশিরভাগেরই বয়স ৪০ বছরের উপরে এবং পূর্ব-অবস্থাজনিত রোগ (comorbidities) ছিল।
তবে আশার কথা হলো, অধিকাংশ রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল এবং হোম আইসোলেশনে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পরিসংখ্যান ও তুলনামূলক চিত্র
সরকারি হিসেবে এখন পর্যন্ত দেশে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ২০,৫২,০৬৩ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ২৯,৫১৮ জন। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার দাঁড়িয়েছে ১.৪৪ শতাংশ।
বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৭০ লাখের বেশি মানুষের এবং মোট শনাক্ত সংখ্যা ৭০ কোটির উপরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ ও জনসচেতনতা
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করেছে। বিশেষ করে যারা বয়স্ক বা দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভুগছেন, তাদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের এক মুখপাত্র বলেন —
“আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকলেও আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে, যেন আবার নতুন ঢেউ তৈরি না হয়।”
ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি: কী হতে পারে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণের হার যদিও বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে সামনে বর্ষা মৌসুমের কারণে ফুসফুসের রোগ ও ভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে পারে। ফলে করোনার ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
তারা মনে করছেন, নিয়মিত মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও জনসমাগম এড়িয়ে চলাই এখনো কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
সারসংক্ষেপঃ
করোনাভাইরাস এখন আর আগের মতো ভীতিকর রূপে নেই। কিন্তু এটি এখনো শেষ হয়ে যায়নি। প্রতিদিনের নতুন সংক্রমণ সংখ্যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, ভাইরাস এখনো সক্রিয়। তাই সচেতনতা ও সাবধানতা বজায় রাখা জরুরি।
তবে প্রশ্ন থেকে যায় — আমরা কি আবারও আগের মতো ভুলে যাচ্ছি সতর্কতা?
এম আর এম – ০০৬১, Signalbd.com