ইসরায়েলি হামলায় ইরানের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি নিহত
ইসরায়েলের সামরিক হামলায় ইরানের সর্বোচ্চ পদস্থ সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামিসহ আরও অনেক সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। এই খবর নিশ্চিত করেছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আইআরআইএনএন।
ইসরায়েলি হামলায় ইরানের উচ্চপদস্থ সেনাবাহিনীর বড় ধাক্কা
মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি ছিলেন ইরানের সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। ইসরায়েলের এই নজিরবিহীন বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন দ্বিতীয় শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা হিসেবে। পাশাপাশি, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামিও একই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
এছাড়া, ‘খাতাম আল-আনবিয়া’ সদর দপ্তরের কমান্ডার মেজর জেনারেল গোলাম আলী রশিদও এই হামলায় নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি, ইরানের গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞানী ও পরমাণুবিজ্ঞানী মোহাম্মদ-মেহদি তাহরাঞ্চি এবং ফেরাইদুন আব্বাসিও প্রাণ হারিয়েছেন।
তেহরান ও অন্যান্য শহরে হামলার চিত্র
ইসরায়েল শুক্রবার ভোররাতে তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন শহরে একের পর এক বিমান হামলা চালায়। এসব হামলায় সামরিক লক্ষ্যবস্তু ছাড়াও আবাসিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তেহরানের এক আবাসিক ভবনে ব্যাপক ধ্বংস দেখা গেছে, যেখানে নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর মরদেহও উদ্ধার করা হয়েছে বলে স্থানীয় ও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সংবাদকর্মীরা জানিয়েছেন।
এই হামলার ফলে ইরানের রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে আতঙ্ক ও ভীতির ছড়াছড়ি, আর আহত ও হতাহত মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: সামরিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা দিন দিন বেড়ে চলছে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘদিনের। সাম্প্রতিক এ হামলাগুলোতে উভয় পক্ষই বড় ধরনের ক্ষতি স্বীকার করেছে, যা এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের শীর্ষ সামরিক নেতৃত্বের ওপর এই হামলা ইসরায়েলের স্পষ্ট বার্তা, যা সামরিক ও কূটনৈতিকভাবে ইরানকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে চালানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও শান্তির আহ্বান
বিশ্ব সম্প্রদায় ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা দুই পক্ষকে সর্তক থাকতে এবং সংলাপের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে আহ্বান জানিয়েছে। বড় দেশগুলোও যুদ্ধবিরতি ও শান্তি প্রক্রিয়ায় এগিয়ে আসার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।
সাধারণ মানুষের দুর্দশা ও মানবিক সংকট
এই সামরিক সংঘাত সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করেছে। নিহতের সংখ্যা বাড়ছে, বহু মানুষ অসহায় অবস্থায় পতিত হয়েছে। খাদ্য ও চিকিৎসাসহ মৌলিক সেবা সংকট তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবিক সংগঠনগুলো ইরানে জরুরি সাহায্যের জন্য কাজ করছে।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় ইরানের সামরিক শীর্ষ নেতৃত্ব নিহত হওয়ার ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য বড় ধাক্কা। বিশ্বকে এখন দ্রুত শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে, নইলে উত্তেজনা আরও প্রকট রূপ নেবে। সিঙ্গনালবিডি ডট কম আপনাদের সঙ্গে থাকছে মধ্যপ্রাচ্যের এই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে নিয়মিত আপডেট নিয়ে।
