সরকারি ব্যয় হ্রাসে সফল হয়ে ইলন মাস্ককে সোনার চাবি উপহার দিলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওভাল অফিসে আয়োজিত এক বিদায় অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ককে বড়সড় সোনার চাবি উপহার দিয়েছেন। সরকারি ব্যয় হ্রাসে অনন্য অবদানের জন্য মাস্ককে এই সম্মাননা দেওয়া হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি দক্ষতা বিভাগের (Department of Government Efficiency – DOEGE) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন ইলন মাস্ক। ২৬ মে ২০২৫ তারিখে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তার বিদায় উপলক্ষে শুক্রবার (৩০ মে) ওভাল অফিসে আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
‘বিশেষ মানুষদের জন্যই এই উপহার’ – ট্রাম্প
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি কাঠের বাক্সে রাখা বড় সোনার চাবি তুলে দেন মাস্কের হাতে। এ সময় তিনি বলেন,
‘আমি এই ধরণের উপহার কেবল বিশেষ মানুষদেরই দিয়ে থাকি। মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রের জন্য যা করেছেন, তা অতুলনীয়। এই সোনার চাবি আমাদের কৃতজ্ঞতার প্রতীক।’
ট্রাম্প আরও বলেন,
‘সরকারি দক্ষতা বিভাগের সমাপ্তি নয় এটা, বরং সঠিক পথে এক নতুন সূচনা।’
চার মাসে ১৭.৫ ট্রিলিয়ন ডলার সাশ্রয়ের দাবি
গত চার মাসে মাস্কের নেতৃত্বে DOEGE-এর কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিপুল অঙ্কের অর্থ সাশ্রয় করতে পেরেছে বলে দাবি করা হয়।
বিভাগটির বরাতে জানানো হয়েছে, প্রশাসনিক খরচ কমিয়ে, কিছু অকার্যকর সরকারি দপ্তর বন্ধ করে ও বৈদেশিক সাহায্যে কাটছাঁট করে প্রায় ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার (১৭.৫ ট্রিলিয়ন) সাশ্রয় হয়েছে।
তবে বিবিসির এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে বলা হয়, দাবিকৃত সাশ্রয়ের এক-চতুর্থাংশেরও কম অংশের সুনির্দিষ্ট দলিল বা হিসাব রয়েছে।
সরকারি দায়িত্ব থেকে বিদায়, কিন্তু পরামর্শ দেওয়া চলবে
বিদায় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক জানান,
‘আমি এখন দায়িত্বে না থাকলেও প্রেসিডেন্টের ইচ্ছায় যেকোনো সময় উপদেষ্টার ভূমিকায় পরামর্শ দিতে প্রস্তুত।’
ট্রাম্পও হাসিমুখে জবাব দেন,
‘আমি সেটাই আশা করছি।’
মাস্ক বলেন, তিনি এখন ‘প্রেসিডেন্টের সেবায়’ আছেন।
‘DOEG ফাদার’ লেখা টি-শার্টে হাজির মাস্ক, কালশিটে নিয়ে প্রশ্ন
কালো টি-শার্টে ‘DOEG ফাদার’ লেখা এবং মাথায় কালো ক্যাপ পরে অনুষ্ঠানে হাজির হন দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এই প্রযুক্তিবিদ।
তবে অনুষ্ঠান শেষে সবচেয়ে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় মাস্কের ডান চোখের নিচে থাকা ঘন কালশিটে দাগ।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় মাস্ক কেটামিন নামক একধরনের মাদক অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করেন। তার ফলে শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় এবং মুখে আঘাতের মতো দাগ তৈরি হয়।
তবে মাস্ক জানিয়েছেন,
‘ঘুষি দিয়েছে আমার পাঁচ বছরের ছেলে এক্স। মজার ছলে বলেছিলাম, “আমার মুখে ঘুষি মারো”, আর সে সত্যিই মেরে বসে।’
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের হাস্যরসাত্মক জবাব দিলেও মাদক সেবনের অভিযোগ এড়িয়ে যান তিনি।
ট্রাম্পের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা
ট্রাম্প বলেন,
‘ইলন মাস্ক যা করেছেন, তা আমাদের প্রশাসনের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। তার সরকারি সংস্কার কর্মসূচি কয়েক প্রজন্মের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, মাস্ক পুরোপুরি বিদায় নিচ্ছেন না, বরং প্রশাসনের সঙ্গে ‘যোগাযোগ রাখবেন’ এবং প্রয়োজন হলে ফিরে আসবেন।