বিশ্ব

গাজায় যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার দাবিতে ফ্রান্স-মালয়েশিয়ার জোরালো আহ্বান

Advertisement

গাজায় চলমান মানবিক সংকটের অবসানে ফ্রান্স ও মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ইসরায়েল ও হামাসকে শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে রাজি করানোর আহ্বান জানিয়েছে। প্যারিসে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনিদের জন্য টেকসই সমাধানের উপরও জোর দেন নেতৃবৃন্দ।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাকরন এবং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম গাজায় যুদ্ধবিরতি ও অবাধ মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন।

ঘটনার বিস্তারিত 

প্যারিসে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দুই রাষ্ট্রপ্রধান গাজায় যুদ্ধের অবসান এবং মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আহ্বান জানান। ইমান্যুয়েল ম্যাকরন বলেন, “গাজায় মানুষের দুর্দশা সীমাহীন হয়ে উঠেছে। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।”
অন্যদিকে আনোয়ার ইব্রাহিম জোর দিয়ে বলেন, “ইসরায়েলের অবরোধের কারণে খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে আছে। এটা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।”

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজার ওপর ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। জাতিসংঘের মতে, ইতোমধ্যেই ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
এছাড়া, গাজার প্রায় ৯০% মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং অবকাঠামোর অর্ধেকের বেশি ধ্বংস হয়েছে। খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট এতটাই তীব্র যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে “পুরো একটি জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়া” হিসেবে অভিহিত করেছে।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া 

আন্তর্জাতিক আদালত ইসরায়েলকে গণহত্যা রোধে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিলেও বাস্তবে সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইরানের উপর চাপ দিলেও, ইসরায়েলের প্রতি পাশ্চাত্যের দ্বিমুখী নীতি বিশ্ববাসী প্রত্যাখ্যান করছে।”
ফ্রান্স এবং মালয়েশিয়ার যৌথ আহ্বান ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা সমর্থন জানিয়েছে।

পরিসংখ্যান 

  • নিহত: ৩৮,০০০+ (৭০% নারী ও শিশু)
  • বাস্তুচ্যুত: ৯০% গাজাবাসী
  • ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামো: ৫০%+
  • চিকিৎসা ব্যবস্থা: কার্যত ভেঙে পড়েছে
  • শিশু অপুষ্টির হার: ৬৭% (UNICEF রিপোর্ট অনুযায়ী)
    এসব তথ্য প্রমাণ করে যে, এই অঞ্চল এক মারাত্মক মানবিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞ মত 

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক ড. জয়নাল আবেদিন বলেন, “এই যৌথ আহ্বান শুধু দুই দেশের নয়, বিশ্ব জনমতের প্রতিচ্ছবি।”
তিনি আরো বলেন, “যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশাধিকার নিশ্চিত না হলে গাজায় দীর্ঘমেয়াদি ক্ষয়ক্ষতি অনিবার্য।”
আরও অনেকে মনে করছেন, ফ্রান্স ও মালয়েশিয়ার এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে ইউরোপ-এশিয়া সম্মিলিত উদ্যোগের সূচনা হতে পারে।

“গাজায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে হলে মানবতার পক্ষে একযোগে দাঁড়ানো জরুরি”— ইমান্যুয়েল ম্যাকরন

সারসংক্ষেপ

ফ্রান্স ও মালয়েশিয়ার এই ঐক্যবদ্ধ আহ্বান গাজা সংকটের সমাধানে একটি নতুন আলো জ্বালাতে পারে।
তবে প্রশ্ন রয়ে যায়—এই আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল ও হামাস কি শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে? নাকি এই মানবিক বিপর্যয় আরও দীর্ঘায়িত হবে?
বিশ্লেষকদের মতে, এখনই বিশ্ববাসী ঐক্যবদ্ধ না হলে ভবিষ্যতের মূল্য হতে পারে আরও ভয়াবহ।

এম আর এম – ০১৬৯, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button