ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলা অব্যাহতরয়টার্স

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে, এবং একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। গতকাল পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের ২৫টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে একটি ড্রোন পাকিস্তানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চার সদস্য আহত হন। ভারতও পাল্টা অভিযোগ এনেছে, দাবি করছে, পাকিস্তানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা তারা সফলভাবে প্রতিহত করেছে।

পাকিস্তান ও ভারত উভয় পক্ষের দাবি

পাকিস্তান জানিয়েছে, তারা ভারতের ২৫টি ড্রোন ধ্বংস করেছে, যেগুলোর মধ্যে কিছু ড্রোন ইসরায়েলি নির্মিত ছিল। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরিফ চৌধুরী জানান, এর মধ্যে একটি ড্রোন লাহোরের কাছে একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, যার ফলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চার সদস্য আহত হন। অন্যদিকে, ভারত দাবি করেছে, পাকিস্তানের একাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা তারা প্রতিহত করেছে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে এবং লাহোরে একটি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করেছে।

কাশ্মীরে চলমান উত্তেজনা

এ উত্তেজনা শুরু হয় ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর, যাতে ২৬ জন নিহত হয়। ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই হামলার দায় চাপালেও পাকিস্তান এ অভিযোগ নাকচ করেছে। এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়, বিশেষত “অপারেশন সিঁদুর” নামে ভারতীয় অভিযানের পর।

মৌলিক মানবিক বিপদ

ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গতকাল পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় গুলি ও কামানের গোলা বর্ষণ করেছে পাকিস্তান। এর ফলে অনেক বাসিন্দা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। এই উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তান ও ভারত উভয় দেশের শেয়ারবাজারেও অস্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে।

বিশ্বনেতাদের সংযত হওয়ার আহ্বান

এদিকে, চলমান সংঘাতের মধ্যেই বিশ্বনেতারা ভারত ও পাকিস্তানকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চীনের পক্ষ থেকেও শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাকিস্তানি তরুণী মালালা ইউসুফজাইও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফকে উত্তেজনা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শেয়ারবাজারের অস্থিরতা

ভারত ও পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে চলমান সংঘাতের প্রভাব পড়েছে। পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে ৬ শতাংশ পতন হয়েছে, আর ভারতের রুপির দাম ১ শতাংশ কমেছে, যা গত তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন।

এদিকে, ভারতের বিরোধী দলগুলো দেশের সরকারকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে, এবং পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ভারত সরকারকে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকার কথা বলেছে।