বিশ্ব

লাহোরে ভারতীয় ড্রোন ধ্বংস করলো পাকিস্তান, সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা

লাহোরে ভারতীয় ড্রোন গুলি করে নামাল পাকিস্তান, সীমান্তে ফের উত্তেজনা

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান সামরিক উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের লাহোর শহরে ভারতীয় একটি ড্রোন ধ্বংস করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। বৃহস্পতিবার সকালে লাহোরের ওয়ালটন রোডে বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভারতীয় একটি নজরদারি ড্রোন পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করলে সেটিকে জ্যামার প্রযুক্তির মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা, ডন ও এনডিটিভি জানায়, ড্রোনটিতে বিস্ফোরকও থাকতে পারে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। বিস্ফোরণের পরপরই নিরাপত্তা বাহিনী এলাকা ঘিরে ফেলে, শুরু হয় সাইরেন বাজানো এবং অনুসন্ধান কার্যক্রম। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনাস্থল ও প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া

ওয়ালটন রোড এলাকাটি লাহোর শহরের গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক ও সামরিক অঞ্চলের সংলগ্ন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, একাধিক বিস্ফোরণের শব্দে স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। অনেকেই ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।

পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, ড্রোনটি নজরদারির উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছিল এবং এতে বিস্ফোরক থাকতে পারে। তবে তারা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে ড্রোনটি জ্যামার দিয়ে নামিয়ে ফেলে এবং ধ্বংস করে।

ভারতের নীরবতা ও বিশ্লেষকদের মত

ঘটনার পর ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ায় টেকনোলজিভিত্তিক সংঘাতের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই সামরিক নজরদারিতে ড্রোন প্রযুক্তির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করছে। সীমান্ত লঙ্ঘনের মতো ঘটনার জেরে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে।

পূর্ববর্তী ঘটনার ধারাবাহিকতা

পাকিস্তানের অভিযোগ, ভারতীয় ড্রোন বারবার তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে। অন্যদিকে ভারতও দাবি করে, পাকিস্তানের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীরা ড্রোন ব্যবহার করে সীমান্তে অস্ত্র ও মাদক পাচার করছে।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তে এক পাকিস্তানি ড্রোন ধ্বংস করে ভারত। পরে পাকিস্তান এর প্রতিবাদে কূটনৈতিক বার্তা দেয়। এবার উল্টো ঘটনা ঘটলো লাহোরে।

ভবিষ্যতের ঝুঁকি

বিশ্লেষকদের মতে, দুই দেশের মধ্যে এমন প্রযুক্তিগত সংঘর্ষ অনাকাঙ্ক্ষিত বড় ধরনের সামরিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে। বিশেষ করে ড্রোনে বিস্ফোরক বা হামলার সরঞ্জাম বহনের অভিযোগ থাকলে তা যুদ্ধাবস্থার কারণ হয়ে উঠতে পারে।

তাই এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক মহলের মধ্যস্থতা ও নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন কূটনীতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button