ইসরায়েলি মন্ত্রীর হুমকি: গাজা ধ্বংস ও ফিলিস্তিনিদের বিতাড়নের পরিকল্পনা

ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ সম্প্রতি গাজা উপত্যকাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার এবং ফিলিস্তিনি জনগণকে তৃতীয় দেশে স্থানান্তরের পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন। এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ ও সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।
স্মোত্রিচের বিতর্কিত ঘোষণা
স্মোত্রিচ বলেন, “গাজা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে, এবং বেসামরিক জনগণকে দক্ষিণে ‘হামাস-মুক্ত’ মানবিক অঞ্চলে পাঠানো হবে, যেখান থেকে তারা তৃতীয় দেশে চলে যাবে।” তিনি আরও জানান, ইসরায়েল সরকার একটি ‘মাইগ্রেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ গঠন করছে, যা গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের প্রক্রিয়া তদারকি করবে।
অপারেশন গিডিওনের চ্যারিয়টস
ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ‘অপারেশন গিডিওনের চ্যারিয়টস’ নামে একটি সামরিক পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, যার লক্ষ্য হামাসকে পরাজিত করা, গাজার সামরিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ধ্বংস করা এবং গাজা উপত্যকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। যুক্তরাজ্যের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক মন্ত্রী হামিশ ফকনার বলেন, “গাজায় ভূমি দখলের যেকোনো প্রচেষ্টা অগ্রহণযোগ্য।” জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে ‘জাতিগত নির্মূল’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
হামাসের প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের ঘোষণার পর, হামাস জানিয়েছে যে তারা আর যুদ্ধবিরতি আলোচনায় আগ্রহী নয়। হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসেম নাইম বলেন, “যতক্ষণ গাজা উপত্যকায় ক্ষুধার যুদ্ধ এবং নিধনের যুদ্ধ চলছে, ততক্ষণ আলোচনায় অংশ নেওয়া বা নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব বিবেচনা করার কোনো মানে হয় না।”
মানবিক সংকট
গাজায় চলমান সংঘর্ষের ফলে মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে। খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে ত্রাণ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচের গাজা ধ্বংস ও ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এই পদক্ষেপ মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলে মনে করা হচ্ছে। গাজায় চলমান মানবিক সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।