গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে নেতানিয়াহুর ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান কাতারের

গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার মাঝে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু-এর একটি মন্তব্য কাতার কর্তৃক ‘উসকানিমূলক’ হিসেবে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর ওই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এই ধরনের বক্তব্য রাজনৈতিক এবং নৈতিক দায়িত্বের ন্যূনতম মানদণ্ড পূরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।”
যুদ্ধবিরতি আলোচনা এবং নেতানিয়াহুর মন্তব্য
সম্প্রতি, গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে নতুন আলোচনা চলছে, যেখানে ইসরায়েল নতুন প্রস্তাব দিয়েছে। গত মার্চে পূর্ববর্তী যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর, ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরু করে। এর প্রেক্ষিতে কাতার এবং মিসর যুদ্ধবিরতির আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা পালন করছে। তবে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি আলোচনায় “উভয় পক্ষের সঙ্গে খেলা বন্ধ করা” মন্তব্য করেন, যা কাতারের পক্ষ থেকে উসকানিমূলক হিসেবে প্রত্যাখ্যাত হয়।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এক্স পোস্টে লেখেন, “কাতার উসকানিমূলক বক্তব্যকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।” তাঁর মতে, এমন বক্তব্য রাজনৈতিক ও নৈতিক দায়িত্বের ন্যূনতম মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ।
হামাসের দাবি ও যুদ্ধবিরতি আলোচনা
গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর, হামাস তাদের মূল দাবি থেকে সরে আসেনি। তাদের দাবি, গাজায় যুদ্ধ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে এবং ইসরায়েলের সব সেনাকে গাজা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। নতুন প্রস্তাবে ইসরায়েলি পক্ষ হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানিয়েছে, যা নিয়ে এখনও আলোচনা চলমান।
ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, গাজা পুনর্গঠনে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকতে পারবে না, যেহেতু তারা যুদ্ধের সময়ই ওই অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে।
কাতারের ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
কাতার এবং মিসর, যাদের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছিল, তারা আবারও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করছে। তবে, নেতানিয়াহুর উসকানিমূলক মন্তব্যের ফলে পরবর্তী আলোচনাগুলোর পরিবেশ আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
কাতারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং গাজা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য ইসরায়েলকে আরো সংযত ও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ
বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি কার্যকর হওয়ার জন্য হামাসের সমর্থন প্রয়োজন, তবে ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের শর্তাবলীর কারণে এটি সহজ নয়। এখন প্রশ্ন হলো, ইসরায়েল এবং হামাস কীভাবে এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারবে।
গাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল এবং সংবেদনশীল। দেশ ও অঞ্চলের রাজনৈতিক শক্তি, জনগণের জীবন, এবং আন্তর্জাতিক প্রভাবকে সমন্বয় করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান আসতে পারে। তবে, নেতানিয়াহুর উসকানিমূলক বক্তব্য আলোচনা এবং শান্তিপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে, যা গাজা শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।