মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহত ৭০০, সংখ্যা আরও বাড়ার শঙ্কা

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আট দেশে গতকাল শুক্রবার আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মিয়ানমারে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)।
ভূমিকম্পের তথ্য
গতকাল স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্র ছিল মিয়ানমারের দ্বিতীয় বড় শহর মান্দালয় থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে, ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের ১২ মিনিট পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার একটি পরাঘাত (আফটার শক) হয়।
হতাহতের সংখ্যা
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং জানিয়েছেন, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯৪ হয়েছে এবং আহত হয়েছেন ১ হাজার ৬৭০ জন। তবে, মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে তথ্য সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
প্রতিবেশী দেশগুলোর ক্ষতি
ভূমিকম্পের ফলে প্রতিবেশী থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানে অন্তত ছয়জন মারা গেছেন এবং ২২ জন আহত হয়েছেন। ব্যাংককের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি বহুতল ভবনসহ তিনটি নির্মাণাধীন স্থাপনায় নিখোঁজ ১০১ জনের সন্ধানে উদ্ধারকাজ চলছে।
আন্তর্জাতিক সহায়তা
মিয়ানমার সরকার জানিয়েছে, ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোয় আহত ব্যক্তিদের জন্য রক্তের বিশেষ প্রয়োজন। মিন অং হ্লাইং বলেছেন, মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সহায়তা গ্রহণ করতে প্রস্তুত। ইতিমধ্যে চীন ও রাশিয়া উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে।
মানবিক সংকট
ভূমিকম্পের পর মিয়ানমারের ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির কর্মকর্তা মোহাম্মদ রিয়াজ বলেছেন, “ধ্বংস ও ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।” মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গবেষক জো ফ্রিম্যান মন্তব্য করেছেন, “দেশটিতে চলমান সংঘাতের কারণে বিপুলসংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ভূমিকম্পের কারণে সেই সংকট আরও তীব্র হলো।”
মিয়ানমারে এই ভূমিকম্পের ফলে মানবিক সংকট আরও গভীর হয়েছে। আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে।