বাংলাদেশ

তারেক রহমান দেশে ফেরার তথ্য জানালে উদ্যোগ নেবে সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

Advertisement

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত ব্যক্তিত্ব বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরতে চাইলে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনে কোনো আবেদন জমা পড়েনি।

সরকারের অবস্থান নিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, তারেক রহমান যদি দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেন, তবে পাসপোর্ট বা ভ্রমণ নথি সংক্রান্ত ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে নিজে থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই।

তার ভাষায়, “এখন পর্যন্ত তারেক রহমান পাসপোর্ট বা ট্রাভেল ডকুমেন্টের জন্য কোনো আবেদন করেননি। আবেদন করলে সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।”

ইউরোপীয় ইউনিয়নের আগ্রহ ও নির্বাচন প্রসঙ্গ

একই সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেন। তিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।

তিনি বলেন, “অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে বন্ধু রাষ্ট্র ও উন্নয়ন সহযোগীদের অবস্থান নিয়ে এখনই মন্তব্য করা অনুমাননির্ভর হবে।”

তারেক রহমানের রাজনৈতিক পটভূমি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই দেশের বাইরে রয়েছেন। বর্তমানে তিনি লন্ডনে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন এবং দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

বাংলাদেশে একাধিক মামলায় দণ্ডিত হওয়ায় তার দেশে ফেরা সবসময়ই রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে একাধিকবার দাবি করা হয়েছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার কারণে তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না।

নির্বাচনের আগে দেশে ফেরা প্রসঙ্গ

আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, তার উপস্থিতি দলকে উজ্জীবিত করতে পারে এবং নির্বাচনকেন্দ্রিক কৌশল নির্ধারণে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে সরকার বলছে, দেশে ফিরতে চাইলে তাকে আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতেই হবে।

বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকারের এই বক্তব্য মূলত আইনি অবস্থান পরিষ্কার করা। এতে বোঝানো হচ্ছে, রাষ্ট্র নিজে থেকে কোনো উদ্যোগ নেবে না, বরং বিএনপিকেই আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নিতে হবে।

একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, “এটি সরকারের জন্য একটি নিরাপদ অবস্থান। তারা বলছে, ফেরার দরজা বন্ধ নয়, তবে নিয়ম মেনে আবেদন করতে হবে।”

অতীতের উদাহরণ

এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবাস ও মুক্তি নিয়েও সরকারের একই রকম অবস্থান ছিল। সরকার বলেছিল, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সবকিছু হতে হবে। একইভাবে তারেক রহমান প্রসঙ্গেও সরকার একই অবস্থান বজায় রাখছে।

ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা

বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নিতে চায় তবে দলের নেতৃত্বে তারেক রহমানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু তার দেশে ফেরার প্রশ্নে আনুষ্ঠানিক আবেদন ছাড়া কোনো পরিবর্তনের সুযোগ নেই।

অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আগ্রহী হওয়ায় বিষয়টি কূটনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ফলে আগামী দিনে তারেক রহমানের দেশে ফেরা শুধু রাজনৈতিক নয়, আন্তর্জাতিক আলোচনারও কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে।

এম আর এম – ১১৭৯, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button