বিশ্ব

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া ‘কৃষ্ণসাগর চুক্তি’তে সম্মত হয়েছে: হোয়াইট হাউস

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত কারিগরি পর্যায়ের আলোচনার পর, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে নিরাপদ নৌ-চলাচল নিশ্চিত করতে একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার কৃষি ও সার রপ্তানি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে, সমুদ্র বীমার খরচ কমাবে এবং এসব লেনদেনের জন্য বন্দর ও অর্থপ্রদান ব্যবস্থায় সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করবে। এছাড়াও, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে হওয়া সমঝোতার বাস্তবায়নে উভয় দেশ কাজ করবে, যার আওতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা নিষিদ্ধ করা হবে।​

হোয়াইট হাউস আরও জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া একটি স্থায়ী ও টেকসই শান্তি অর্জনের লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুনরায় জোর দিয়ে বলেছেন যে, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে উভয় পক্ষের হত্যাযজ্ঞ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে, যা একটি টেকসই শান্তি চুক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ। ​

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, রাশিয়া কৃষ্ণসাগর অঞ্চলে জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন একটি চুক্তি করতে আগ্রহী, তবে শর্ত হলো—যুক্তরাষ্ট্রকে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে এটি মেনে চলার নির্দেশ দিতে হবে।

তবে, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই চুক্তির শর্তগুলো মেনে চলবেন কিনা বা যুক্তরাষ্ট্র তাকে চুক্তি মেনে চলতে চাপ দেবে কিনা—সে বিষয়ে হোয়াইট হাউস কোনো মন্তব্য করেনি। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘ফাঁপা বক্তব্য’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, কারণ রাশিয়া একদিকে শান্তি নিয়ে কথা বলছে, অন্যদিকে ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ​

এদিকে, রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়ই কৃষ্ণসাগরে হামলা বন্ধের ব্যাপারে একমত হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়েই কৃষ্ণসাগরে সংঘাত বন্ধ, সেনা প্রত্যাহার এবং নিরাপদ জাহাজ চলাচলের ব্যাপারে একমত হয়েছে। পাশাপাশি, বাণিজ্যিক জাহাজকে সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় মার্কিন ও রুশ প্রতিনিধিদের মধ্যে ১২ ঘণ্টার বৈঠকে ২০২২ সালের কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করা এবং তার বিনিময়ে রুশ সার রপ্তানিতে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

এই চুক্তি ইউক্রেন যুদ্ধের কূটনৈতিক সমাধানের ক্ষেত্রে একটি সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে, এর বাস্তবায়ন এবং প্রভাব নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর প্রতিশ্রুতি ও কার্যক্রমের ওপর।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button