‘নেতানিয়াহু ইসরায়েলের বড় শত্রু’: ইসরায়েল টানা তৃতীয় দিন ব্যাপক বিক্ষোভ

ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা শেন বেতের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করার সরকারি সিদ্ধান্ত এবং গাজায় আবার হামলা শুরুর প্রতিবাদে গতকাল শনিবার রাজধানী তেল আবিবে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার আগে গোয়েন্দা তথ্য দিতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার রোনেনকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়।
নেতানিয়াহুর বক্তব্য
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গত সপ্তাহে বলেন, তিনি রোনেন বারের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। রোনেনের বরখাস্তের আদেশ আগামী ১০ এপ্রিল কার্যকর হবে।
বিক্ষোভের কারণ
নেতানিয়াহু সরকারের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরই টানা তিন দিন ধরে ইসরায়েলে বিক্ষোভ চলছে। ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট গত শুক্রবার সরকারি সিদ্ধান্তকে সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে আদেশ জারি করেন। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তিনি এই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তবে তিনি এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য
বিক্ষোভকারীরা গাজায় হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলিদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন। তেল আবিবের হাবিমা স্কয়ারে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ইসরায়েলের নীল–সাদা পতাকা হাতে অবস্থান নেন। মোশে হাহারোনি (৬৩) বলেন, “ইসরায়েলে সবচেয়ে বড় ভয়ানক শত্রু হচ্ছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ২০ বছর ধরে তিনি আমাদের দেশকে গ্রাহ্য করেননি।”
হামাসের হাতে বন্দীদের পরিস্থিতি
নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা শুরুর ফলে বন্দী ৫৯ ইসরায়েলির ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব বন্দীর মধ্যে ২৪ জন জীবিত রয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, ইসরায়েলি বোমা হামলা শুরুর পর ওই সব বন্দী হয় হামাসের হাতে নিহত হবেন অথবা দুর্ঘটনাবশত ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় প্রাণ যাবে।
সরকারের প্রতিশ্রুতি
নেতানিয়ানহুর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা অফির ফক বলেন, “হামাসের হাতে জিম্মি ব্যক্তিদের ঘরে ফিরিয়ে আনতে আমাদের যা করার দরকার, আমরা তা–ই করব।” তিনি আরও বলেন, “হামাস সামরিক চাপের বিষয়টি বুঝতে পারছে। একমাত্র সামরিক চাপেই তারা কাবু হবে।”
নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে চলমান এই বিক্ষোভ ইসরায়েলের রাজনৈতিক পরিস্থিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরছে। গাজায় হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলিদের মুক্তির দাবি এবং সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জনমত স্পষ্ট হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রভাব ফেলতে পারে।