বিশ্ব

ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছেই, নিরীহ প্রাণ ঝরছে ফিলিস্তিনে

ইসরায়েল। উপত্যকাটিতে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৫০ হাজারের কাছাকাছি, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। গত ৪৮ ঘণ্টায় ১৩০ জনের প্রাণহানি হয়েছে, এরপরও ইসরায়েল বলছে, হামাসকে নির্মূল করতে তাদের এ হামলা।

হামলার পটভূমি

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে টানা ১৫ মাস গাজায় নির্বিচার হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। দীর্ঘ আলোচনার পর ১৯ জানুয়ারি উপত্যকাটিতে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়, কিন্তু মঙ্গলবার ভোররাতে গাজায় আবার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে গতকাল পর্যন্ত টানা পাঁচ দিন উত্তর থেকে দক্ষিণ—উপত্যকাটির সর্বত্র নৃশংস হামলা চলে।

হামলার পরিণতি

গাজায় যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি স্থল বাহিনীও অভিযান চালিয়েছে। উত্তর গাজায় ব্যাপক কামানের গোলাবর্ষণ করা হয়েছে, যা নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরেও আঘাত হেনেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত পাঁচ দিনে ৬৩৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে দুই শতাধিক শিশু রয়েছে। জাতিসংঘের শিশু তহবিল–ইউনিসেফ জানিয়েছে, এই হামলায় ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ইসরায়েল সীমান্ত ক্রসিংগুলো বন্ধ করে দেওয়ার ফলে ত্রাণসহায়তা প্রবেশ করতে পারছে না। জাতিসংঘের ত্রাণ ও মানবিক সহায়তাসংক্রান্ত সংস্থার মুখপাত্র ওলগা চেরেভকোর বলেছেন, এই পরিস্থিতি সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর হুমকি

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, হামাস যদি বাকি জিম্মিদের মুক্তি না দেয়, তবে গাজার কিছু অংশ স্থায়ীভাবে দখল করে নেওয়া হবে। তিনি জানান, সব জিম্মিকে ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত গাজায় ‘ক্রমবর্ধমান তীব্রতার সঙ্গে’ স্থল অভিযান চলবে।

লেবাননে হামলা

ইসরায়েল লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। গতকাল ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর রকেট হামলার পর দক্ষিণ লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটির বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলার দাবি করেছে নেতানিয়াহু সরকার।

হামাসের টিকে থাকার লড়াই

যুদ্ধবিরতি ভেঙে ইসরায়েলের হামলা শুরুর দিন হামাসের সরকারপ্রধান এসাম আদালিস ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাপ্রধান আবু ওয়াতফা নিহত হন। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা ১৫ মাসে প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। তবে হামাস তাদের অস্তিত্ব ধরে রাখার চেষ্টা করছে এবং নতুন কৌশল গ্রহণ করছে।

গাজায় চলমান এই নৃশংসতা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদাসীনতা ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি স্পষ্ট উদাহরণ। ইসরায়েলের হামলার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি সত্ত্বেও, পরিস্থিতি উন্নতির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button