গাজায় এক দিনে নিহত ৭০ ফিলিস্তিনি, ‘সর্বশেষ সতর্কতা’ জারি ইসরায়েলের

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনী আজও জোরালো হামলা অব্যাহত রেখেছে। গতকাল বুধবার এক দিনে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৭০ জন নিহত হয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার থেকে যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় হামলা জোরদার করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই দিনে নিহত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত ৪৩৬, যার মধ্যে ১৮৩টি শিশু।
ইসরায়েলের হামলা ও সতর্কতা
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় স্থল অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, নিরাপত্তাব্যবস্থা বিস্তৃত করার জন্য মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় আংশিক বাফার জোন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই অভিযান শুরু করা হয়েছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ গাজার বাসিন্দাদের উদ্দেশে একটি সতর্কতামূলক ভিডিওতে বলেন, “এটাই সর্বশেষ সতর্কবার্তা।” তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের পরামর্শ মেনে নিন। জিম্মিদের ফিরিয়ে দিন এবং হামাসকে সরিয়ে দিন।”
গাজার পরিস্থিতি
গাজার বাসিন্দারা আবারও ধ্বংসস্তূপে প্রিয়জনের মরদেহ খোঁজার মতো করুণ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। রাফার রেডক্রস হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ চিকিৎসা কর্মকর্তা ফ্রেড ওলা বলেন, “এখন আমরা বাতাসে আতঙ্ক অনুভব করছি। আমরা যাঁদের সেবা দিচ্ছি, তাঁদের চোখেমুখে ব্যাথা আর ধ্বংসের চিহ্ন দেখতে পাচ্ছি।”
জিম্মি পরিস্থিতি
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামলা চালায় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে। বর্তমানে ৫৮ জন গাজায় জিম্মি আছেন এবং ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানায়, জিম্মি অবস্থায় ৩৪ জন মারা গেছেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
গাজায় হামলার এই নতুন পর্যায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিদেশি সরকারগুলো যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখতে আহ্বান জানালেও ইসরায়েলি বাহিনী হামলা জোরদার করেছে। গত জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেস্তে গেছে এবং গাজার পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
গাজায় চলমান সহিংসতা এবং মানবিক সংকটের এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। যুদ্ধবিরতি এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। গাজার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার রক্ষার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতা প্রয়োজন।