বিশ্ব

ইউরোপের পানীতে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক হুমকি দিয়ে চলেছেন, এবং এবার তিনি ইউরোপের ওয়াইন, কনিয়্যাক ব্র্যান্ডি ও অন্যান্য পানীয়তে ২০০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই ঘোষণার ফলে প্রশ্ন উঠেছে, ট্রাম্প কোথায় গিয়ে থামবেন।

শুল্ক যুদ্ধের প্রেক্ষাপট

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করেছে, যার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) রয়েছে। ইইউ জানিয়েছে, তারা পরের মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হুইস্কি ও অন্যান্য পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে। ট্রাম্প স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে, অন্যান্য দেশ যতবার তাঁদের পণ্যে শুল্ক চাপাবে, ততবারই তিনি ‘প্রত্যাঘাত’ করবেন।

বিশ্ব অর্থনীতির ওপর প্রভাব

এই শুল্ক ও পাল্টা শুল্কের লড়াইয়ের ফলে বিশ্ব অর্থনীতি শ্লথ হয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম অ্যালুমিনিয়াম সরবরাহকারী কানাডা ট্রাম্পের শুল্কের জবাবে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে এবং তারা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) দ্বারস্থ হয়েছে। কানাডার অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যসচিবের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে, তবে তা কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

আমদানিকারকদের উদ্বেগ

মেরি টেইলর নামের এক মার্কিন আমদানিকারক বিবিসিকে বলেন, “ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপের ঘোষণা আমাদের জীবিকার জন্য বড় হুমকি।” তিনি জানান, ২০০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে রেস্তোরাঁ, বার ও পরিবেশকদের জন্য এটি বিপর্যয়কর হবে। টেইলর প্রতিবছর ইউরোপ থেকে ২০ লাখ বোতল পানীয় আমদানি করেন।

শেয়ার বাজারের প্রতিক্রিয়া

ট্রাম্পের ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণায় গত শুক্রবার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শেয়ার সূচকের পতন হয়েছে। ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যেসব অ্যালকোহলভিত্তিক পানীয় আমদানি করা হয়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্রেঞ্চ ওয়াইন, ইতালিয়ান ওয়াইন, ফ্রেঞ্চ স্পিরিটস, ডাচ বিয়ার, স্প্যানিশ ওয়াইনস, আইরিশ স্পিরিটস, এবং ইতালিয়ান ভারমৌথস।

ট্রাম্পের ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্কে মন্তব্য

ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের অনেক পুরোনো মিত্র ঠিক, কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি করা।”

ট্রাম্পের এই নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নতুন অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্কের ওপর এর প্রভাব কী হবে, তা সময়ই বলবে। তবে, এই পরিস্থিতি ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button