যুদ্ধবিরতির জন্য যেসব দাবি মানতে হবে, তার তালিকা দিয়েছে রাশিয়া

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করতে একটি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিজেদের দাবিদাওয়ার একটি তালিকা উপস্থাপন করেছে রাশিয়া। এ বিষয়ে জানেন, এমন দুটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রাশিয়ার দাবির বিষয়বস্তু
তবে মস্কো ওই তালিকায় ঠিক কী কী অন্তর্ভুক্ত করেছে অথবা সেগুলো মেনে না নেওয়ার আগে তারা কিয়েভের সঙ্গে কোনো ধরনের শান্তি আলোচনায় বসতে আগ্রহী কি না, সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়া ও মার্কিন কর্মকর্তারা মুখোমুখি বৈঠকে চুক্তির শর্ত নিয়ে কথা বলেছেন এবং তিন সপ্তাহ ধরে তাঁদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলেছে।
পূর্ববর্তী দাবির পুনরাবৃত্তি
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর আগে ক্রেমলিন ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোর কাছে যেসব দাবি জানিয়েছিল, এবারের দাবিও কমবেশি সে রকমই। পূর্বে রাশিয়া যে দাবি জানিয়েছিল, তাতে উল্লেখ ছিল:
- ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্যপদ নিতে পারবে না।
- ইউক্রেনে কোনো বিদেশি সেনা মোতায়েন করা যাবে না।
- রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের আরও যে চারটি অঞ্চলের দখল নিয়েছেন, সেগুলোকে রাশিয়ার ভূখণ্ড হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে হবে।
ন্যাটোর পূর্ব দিকে বিস্তারের সমাধান
রাশিয়া কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কাছে আরও একটি দাবি জানিয়ে আসছে, যা হলো ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর ‘মূল কারণগুলোর’ সমাধান করা, যার মধ্যে ন্যাটোর পূর্ব দিকে বিস্তারের বিষয়টিও রয়েছে।
যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনে ৩০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি একে ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে শান্তি আলোচনার পথে প্রথম পদক্ষেপ বলে বিবেচনা করছেন এবং এই প্রস্তাবে রাজি আছেন। ট্রাম্প এখন পুতিনের জবাবের অপেক্ষায় আছেন।
পুতিনের মনোভাব
সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা নিয়ে পুতিনের মনোভাব এখনো অস্পষ্ট। যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিস্তারিতও চূড়ান্ত হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তা, আইনপ্রণেতা ও বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেন ও ইউরোপকে ভাগ করতে এবং যেকোনো আলোচনায় নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে পুতিন সম্ভাব্য এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ব্যবহার করতে চাইবেন।
ওয়াশিংটনে রাশিয়ার দূতাবাস এবং হোয়াইট হাউস থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কথা বলতে রাজি হয়নি।
রাশিয়ার দাবির তালিকা এবং যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইউক্রেনের পরিস্থিতি এবং রাশিয়ার কৌশলগত লক্ষ্যগুলি ভবিষ্যতে শান্তি আলোচনা ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।