ভয় দেখালে আলোচনা নয়, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে ইরান

ইরান আজ সোমবার ঘোষণা করেছে, ‘ভয় দেখানো’ হলে দেশটি কোনো ধরনের আলোচনায় অংশ নেবে না। এই মন্তব্যটি এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা থেকে ইরাককে কিছু ছাড় দেওয়ার সুযোগ বাতিল করার পর।
ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশলের অংশ হিসেবে ইরাকের জন্য বিশেষ ছাড় বাতিল করেছেন। এর ফলে, নিষেধাজ্ঞার পরও ইরাক প্রতিবেশী দেশ ইরান থেকে বিদ্যুৎ কিনতে পারছিল। বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তেহরানকে আরও বেশি চাপ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ইরানের প্রতিক্রিয়া
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরঘাচি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (পূর্বে টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে বলেন, “চাপ প্রয়োগ আর ভয় দেখানোর পর আমরা আলোচনা করব না। এটা কখনোই বিবেচনা করা হবে না।” তিনি আরও বলেন, “ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বরাবরই পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সামরিকীকরণ বলে কিছুই নেই।”
পারমাণবিক আলোচনা
জাতিসংঘে ইরানের মিশন গতকাল রোববার ইঙ্গিত দেয়, পারমাণবিক কর্মসূচির সম্ভাব্য সামরিকীকরণ সম্পর্কে মার্কিন উদ্বেগ দূর করতে আলোচনা করার জন্য তেহরান উন্মুক্ত থাকতে পারে। তবে, ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করবে না।
নিষেধাজ্ঞার প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল জানায়, তেহরানের ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞায় ইরাকের ছাড় পাওয়ার বিষয়টি নতুন করে নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ইরান যাতে অর্থনৈতিক বা আর্থিকভাবে কোনো ধরনের স্বস্তি না পায়, তা নিশ্চিত করা হবে।
ইরাকের জ্বালানি নির্ভরতা
ইরাকের গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ জোগান দেয় প্রতিবেশী ইরান। এই পরিস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা তেহরান যথেষ্ট পরিমাণ আয়ের সুযোগ পায়। ২০১৮ সালে ইরাককে এই ছাড় দেওয়া হয়েছিল, যখন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে তেহরানের সঙ্গে সই হওয়া পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প।
মার্কিন দূতাবাসের মন্তব্য
বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র গতকাল বলেন, ইরানের জ্বালানি উৎসের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে ইরাককে যত দ্রুত সম্ভব বের হয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, “ইরানের পারমাণবিক হুমকি বন্ধ করা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির রাশ টানা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সর্বোচ্চ চাপ দেওয়ার কৌশল বেছে নিয়েছেন।
ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এবং নিষেধাজ্ঞার প্রভাব দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গভীর প্রভাব ফেলছে। ইরান তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা ভয় দেখানোর কৌশলের বিরুদ্ধে আলোচনা করতে প্রস্তুত নয়। এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা আরও বাড়িয়ে তুলছে।