সরকারের খরচ কমানোর মাস্কের কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিচারক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যে পন্থায় ইলন মাস্কের ‘ডিপার্টমেন্ট অব ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই)’ গঠন ও পরিচালনা করছে, তা সংবিধান লঙ্ঘন করে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ওয়াশিংটনের একজন ফেডারেল বিচারক। বিচারক কলিন কলার-কোটলে গতকাল সোমবার দেওয়া এক আদেশে এ সন্দেহ প্রকাশ করেন। যদিও তাঁর মন্তব্য বাধ্যতামূলকভাবে মানা কোনো আদেশের অংশ নয়, তবে এটি মাস্কের বিভাগের কার্যক্রমের জন্য একটি সংকেত হতে পারে।
বিচারকের উদ্বেগ
বিচারক কলার-কোটলে বলেন, “আমার কাছে যে সীমিত নথিপত্র এসেছে, তার ভিত্তিতে ইউএসডিএস-এর কাঠামো ও কার্যক্রমের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।” তিনি উল্লেখ করেন যে, মাস্কের এই বিভাগ সংবিধানের নিয়োগসংক্রান্ত ধারা লঙ্ঘন করেছে। ফেডারেল সংস্থার প্রধানদের প্রেসিডেন্টের মনোনয়ন ও সিনেটের অনুমোদন পেতে হয়, কিন্তু মাস্ক এ ক্ষেত্রে কোনো মনোনয়ন বা অনুমোদন পাননি।
মামলার প্রেক্ষাপট
যুক্তরাষ্ট্রের দুটি শ্রমিক ইউনিয়ন এবং লাখ লাখ অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর প্রতিনিধিত্বকারী একটি গ্রুপের করা মামলার শুনানিতে বিচারক কলার-কোটলে এই মন্তব্য করেন। মামলাটিতে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রে মাস্কের দলের প্রবেশাধিকার বন্ধে আদালতের স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছে।
বিচারক সরকারি কৌঁসুলির কাছে জানতে চান, ডিওজিই বিভাগে ইলন মাস্কের পদবি কী। জবাবে কৌঁসুলি জানান, মাস্ক এটির কোনো প্রশাসক নন কিংবা কোনো কর্মীও নন। এই বক্তব্য মাস্কের দলের কার্যক্রম নিয়ে করা পৃথক একটি মামলায় হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তার দেওয়া বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
আইনি চ্যালেঞ্জ
গত সপ্তাহে ম্যানহাটনের একজন ফেডারেল বিচারক একই ধরনের একটি আইনি বিষয়ে আদেশ দেন, যেখানে ট্রেজারি বিভাগের পেমেন্ট ও ডেটা ব্যবস্থায় মাস্কের ব্যয়হ্রাস দলের পুনরায় প্রবেশের সুযোগ বাতিল করা হয়। এই মামলায় বলা হয়, ট্রেজারি বিভাগের নথিপত্রে ট্রাম্পের দলের প্রবেশের সুযোগ দেওয়া অবৈধ।
মাস্কের বিভাগ ‘ইউএস ডিওজিই সার্ভিস’ নামে পরিচিত এবং ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের খরচ কমানো ও ফেডারেল কর্মীদের ব্যাপকভাবে ছাঁটাইয়ে মাস্কের পদক্ষেপগুলো আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
বিচারকের উদ্বেগের কারণ
বিচারক কলার-কোটলে মাস্কের বিভাগের কার্যক্রম নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানতে চান, ইউএস ডিওজিই সার্ভিসের দায়িত্বে প্রকৃতপক্ষে কে এবং মাস্কের ভূমিকা কী। সরকারি কৌঁসুলি জানান, “মাস্ক প্রেসিডেন্টের একজন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা,” কিন্তু এর বাইরে কোনো তথ্য নেই। বিচারক এই জবাবে বিরক্তি প্রকাশ করেন এবং ডিওজিইয়ের কাঠামো ও ক্ষমতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
বিচারক কলার-কোটলের মন্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে, ইলন মাস্কের ‘ডিপার্টমেন্ট অব ইফিসিয়েন্সি’ কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে আইনগত জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এটি মার্কিন সরকারের খরচ কমানোর প্রচেষ্টায় একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে পারে।