তৌহিদ আফ্রিদির প্রিয় খাবার নিয়ে আদালতে পরিবার, অনুমতি দেননি বিচারক

আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদিকে শনিবার (৩০ আগস্ট) আদালতে হাজির করা হয়। তার পরিবারের সদস্যরা কেএফসির চিকেন নিয়ে উপস্থিত হলেও আদালত তাকে খাবার খাওয়ার অনুমতি দেননি। তবে সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়।
পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। দুপুর ১২টা ৫৬ মিনিটে এজলাসে তোলা হয়, যেখানে তার মুখে মাস্ক, মাথায় হেলমেট, হাতে হাতকড়া এবং বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ছিল। ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে তিনি হাজির হন।
আদালতে হাজিরা ও শুনানি
দুপুর ২টা ৫৮ মিনিটে বিচারক এজলাসে ওঠেন। তৌহিদ আফ্রিদির পক্ষে তার আইনজীবী মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম জামিনের আবেদন করেন। এছাড়া তার মা, বোন ও স্ত্রীর সাক্ষাত এবং খাবার খাওয়ার অনুমতি চান। আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করেন, তবে পরিবারের সাক্ষাতের জন্য ১৫ মিনিট সময় দেন।
প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই শরীফুজ্জামান জানান, আদালত কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশনের আদেশ দিয়েছেন।
পরিবারের সাক্ষাত ও পরিস্থিতি
বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে তৌহিদ আফ্রিদির সঙ্গে তার মা আসফিয়া উদ্দিন, বোন নিশাত তাসনিম প্রমি এবং স্ত্রী রিশার সাক্ষাৎ হয়। মা তাকে বুকে টেনে আদর করেন, বোন ও স্ত্রীও তাকে শান্তনা ও সান্ত্বনা দেন। তার চাচি এবং অন্যান্য আত্মীয়ও উপস্থিত ছিলেন।
পরিবারের কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তৌহিদ আফ্রিদির প্রিয় খাবার কেএফসির চিকেন। তবে আদালতের অনুমতি না মেলায় সে খাবার খেতে পারেননি। পরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
প্রাথমিক গ্রেপ্তার ও রিমান্ড
গত রোববার রাতে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি পুলিশ। পরদিন পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। এর আগে তার বাবা নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। রিমান্ড শেষে ২৩ আগস্ট তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালতের নির্দেশনা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
আদালতে তৌহিদ আফ্রিদি তার অসুস্থতার কথা জানান। আদালত তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন। সিআইডি ও কারাগার কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন, তার স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে যথাযথ মনোযোগ দেওয়া হবে।
বিশ্লেষণ
এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে তার পরিচিতি এবং জনপ্রিয়তার কারণে বিষয়টি রাজনৈতিক ও সামাজিক মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদালত পরিবারকে সাক্ষাতের অনুমতি দিলেও খাবার খাওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার সিদ্ধান্ত আইনি দিক থেকে স্বাভাবিক। এটি কারাবিধি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে নেওয়ার অংশ।
প্রতিক্রিয়া
ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে তৌহিদ আফ্রিদির সমর্থকরা আদালতের সিদ্ধান্তকে বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। কেউ এটিকে আইনগত নিয়মের অংশ বলে দেখছেন, কেউ এটিকে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা হিসেবে দেখছেন।
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আদালতের এ ধরনের নির্দেশনা কারাগারে নিরাপত্তা ও আইন সঠিকভাবে বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন।
তৌহিদ আফ্রিদির আদালতে হাজিরা এবং তার প্রিয় খাবার খাওয়ার অনুমতি না দেওয়া সামাজিক ও আইনি প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে। আদালত, কারাগার কর্তৃপক্ষ ও পরিবার একযোগে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। এখন প্রশ্ন থেকে যায়, তৌহিদ আফ্রিদির ভবিষ্যৎ বিচার এবং সামাজিক প্রতিক্রিয়া কেমন হবে।
এম আর এম – ১১০১, Signalbd.com