পেরুর দক্ষিণাঞ্চলীয় আরেকুইপা অঞ্চলে এক যাত্রীবাহী বাস গভীর খাদে পড়ে অন্তত ৩৭ জন নিহত ও আরও অনেকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা গেছে, বুধবার ভোরের দিকে প্যানআমেরিকানা সুর মহাসড়কে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে ছিটকে পড়ে। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকর্মী, পুলিশ ও স্থানীয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মীরা দ্রুত ছুটে যান।
দুর্ঘটনার বিস্তারিত
স্থানীয় আঞ্চলিক স্বাস্থ্যপ্রধান ওয়ালথার ওপোর্তো জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাস্থলেই ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা গেছে। তিনি আরও বলেন, “বাসটি প্রথমে একটি ভ্যানের সঙ্গে ধাক্কা খায়, এরপর তা রাস্তা থেকে খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।”
স্থানীয় উদ্ধারকর্মীরা বাসের ধ্বংসস্তূপ থেকে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। দুর্ঘটনার সময় বাসে মোট কতজন আরোহী ছিল, তা নির্ধারণে তদন্ত চলছে।
দুর্ঘটনার প্রাথমিক কারণ
প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, বাসটির নিয়ন্ত্রণ হারানোর পেছনে রাস্তার অবস্থার অবনতি এবং প্রথমে অন্য একটি যানবাহনের সঙ্গে সংঘর্ষ মূল ভূমিকা রেখেছে। স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থলটি পাহাড়ি এলাকায় এবং পথ সংকীর্ণ হওয়ায় ছোট ভুলও বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, “এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রায়শই তীব্র পাহাড়ি পথ, অতিরিক্ত যাত্রী এবং যানবাহনের অনিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের কারণে ঘটে।”
আহতদের অবস্থা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা
দুর্ঘটনায় আহত মোট ২৬ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন আহতদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনে অতিরিক্ত চিকিৎসক ও উদ্ধারকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আহতদের ত্বরাৎ চিকিৎসা ও মনিটরিং চলছে, যাতে তাদের জীবন রক্ষা করা যায়।
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া
এই দুর্ঘটনার পর আরেকুইপা অঞ্চলে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধারকর্মীদের সহায়তা করছেন এবং আহতদের পরিবারদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে এবং অতিরিক্ত উদ্ধার ও চিকিৎসা ইউনিট পাঠিয়েছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “এ ধরনের দুর্ঘটনা আমাদের এলাকায় খুবই ভয়ঙ্কর। আমরা চাই যেন সরকার রাস্তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও উন্নত করে।”
পেরুর দক্ষিণাঞ্চলীয় অঞ্চলে আগে এমন দুর্ঘটনা ঘটে আসছে। পাহাড়ি রাস্তা, রাস্তার মানের অবনতি এবং যাত্রীবাহী গাড়ির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়াই এর মূল কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ট্রান্সপোর্ট নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করেছেন, পাহাড়ি অঞ্চলে যানবাহনের অতিরিক্ত গতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবে এই ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।
প্রশাসনের পদক্ষেপ
স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ দ্রুত কার্যক্রম শুরু করেছে। দুর্ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে এবং উদ্ধার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আহতদের যথাযথ চিকিৎসা প্রদানের জন্য হাসপাতালগুলোতে বিশেষ তৎপরতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
স্থানীয় পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, “ঘটনার পরপরই আমরা উদ্ধার ও নিরাপত্তা কার্যক্রম শুরু করেছি। এছাড়া, দুর্ঘটনার সঠিক কারণ বের করার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে।”
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ
পেরুর এই দুর্ঘটনা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাহাড়ি অঞ্চলে বাস চলাচলের জন্য আরও কঠোর নিয়ম এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন। এছাড়া, দীর্ঘমেয়াদে রাস্তার মান উন্নয়ন ও যানবাহনের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা আরও উল্লেখ করেছেন, “এ ধরনের দুর্ঘটনা সাধারণত যাত্রীদের জীবন হানি ছাড়াও স্থানীয় পর্যটন ও অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলে। তাই কার্যকর পরিকল্পনা অপরিহার্য।”
পেরুর আরেকুইপা অঞ্চলে এক যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে অন্তত ৩৭ জন নিহত এবং আরও অনেকজন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার প্রাথমিক কারণ রাস্তার অবনতি এবং যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ হারানো। স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত কার্যক্রম শুরু করেছেন। আহতদের চিকিৎসা এবং নিহতদের পরিবারের পাশে প্রশাসন দাঁড়িয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, পাহাড়ি এলাকায় যাত্রীবাহী বাস চলাচলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত না হলে এমন দুর্ঘটনা ভবিষ্যতেও ঘটতে পারে।
এম আর এম – ২২১৫,Signalbd.com



