বাংলাদেশজাতীয়

জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবি না রাখার দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন ও সমাবেশ

Advertisement


জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবি না রাখার দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের সাতমাথা এলাকায় ‘বগুড়া জেলা পর্দাশীল নারী সমাজ’-এর ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে শতাধিক নারী অংশ নেন। তারা দাবি জানান, জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবির পরিবর্তে শুধু আঙুলের ছাপ দিয়ে নাগরিকদের পরিচয় শনাক্ত করতে হবে।

মানববন্ধনে নারীদের দাবি

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী নারীদের পক্ষে বক্তব্য দেন মোছাম্মাত ওয়ালিদা খাতুন। তিনি বলেন, “গত ১৬ বছর ধরে পর্দাশীল নারীদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। শুধুমাত্র ছবি তুলতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তারা ভোটার আইডি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। ফলে সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।”

ওয়ালিদা খাতুন আরও বলেন, “জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির সময় পর্দাশীল নারীদের বাধ্যতামূলকভাবে মুখের পর্দা খুলে ছবি তুলতে বলা হয়। এটি অত্যন্ত বিব্রতকর এবং ইসলামী মূল্যবোধের পরিপন্থী। আমরা এই পরিস্থিতিতে চরম অসন্তুষ্ট। জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবি তুলে আমরা গুনাহগার হতে চাই না। এজন্য আমরা দাবি জানাই, শুধুমাত্র আঙুলের ছাপ বাধ্যতামূলক করা হোক।”

ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পরিচয় নিশ্চিতের দাবি

বক্তারা আরও বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ বা জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজে নারীদের তথ্য সংগ্রহ এবং আঙুলের ছাপ নেওয়ার সময় নারীদের নিয়োগ দিতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, ফরম পূরণসহ সব ক্ষেত্রেই নারীদের ছবি তোলার বাধ্যবাধকতা বাতিল করার দাবিও জানান তারা

স্মারকলিপি প্রদান

মানববন্ধন শেষে নারীরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবি রাখার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানানো হয়।

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন জানান, ‘মহিলা আঞ্জুমান’ নামের একটি সংগঠন শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে। তারা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করার পর কর্মসূচি শেষ হয়।

সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

এই দাবি ঘিরে সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট যথেষ্ট নিরাপদ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয় নিশ্চিত করার উপায় হতে পারে। আবার অনেকে মনে করেন, ছবি সংযুক্ত না থাকলে জাতীয় পরিচয় যাচাই প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হতে পারে।

মতামত

নির্বাচনী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আধুনিক বিশ্বে বায়োমেট্রিক ডেটার ব্যবহার বাড়ছে। তবে ছবির ব্যবহারও বিশ্বজুড়ে পরিচয় নিশ্চিত করার একটি প্রধান উপায়। নারীদের দাবির বিষয়টি সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে একটি যুগোপযোগী সমাধান দিতে পারে।

পরবর্তী করণীয়

নারীদের এই দাবির বিষয়ে প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের ক্ষেত্রে কোনো নীতিগত পরিবর্তন আসবে কিনা, সেটি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে। পর্দাশীল নারীদের এই আন্দোলন একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইস্যুতে দৃষ্টিপাত করছে।

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button