ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় হামাসকে ‘টার্গেট’ করে সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখতে ইসরায়েলি জনগণের সমর্থন পাচ্ছেন। সাম্প্রতিক সংঘর্ষে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়া সত্ত্বেও ইসরায়েলিদের বড় অংশ নেতানিয়াহুর কড়া অবস্থানকে সমর্থন করছে। আন্তর্জাতিক চাপ ও মধ্যপ্রাচ্যের জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি সত্ত্বেও তিনি সামরিক নীতি শক্তিশালীভাবে এগিয়ে নিতে সক্ষম হচ্ছেন।
সামরিক অভিযান এবং নেতানিয়াহুর অবস্থান
গত কয়েক দিনে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান তীব্র আকার নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নিজে নির্দেশ দিয়েছেন, হামাসকে লক্ষ্য করে অভিযান অব্যাহত রাখা হবে। তেলআবিবের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, নেতানিয়াহু যুদ্ধ পুনরায় শুরু করতে সব ধরনের কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপ নেবেন।
এর মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে বাধা দেওয়া এবং প্রয়োজনমতো আন্তর্জাতিক চাপ মোকাবিলা করা। নেটানিয়াহুর এই পদক্ষেপ ইসরায়েলিদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়, বিশেষ করে যেসব মানুষ হামাসের প্রভাব কমাতে চান তাদের মধ্যে।
গাজার সাম্প্রতিক সংঘর্ষ এবং প্রভাব
রাতভর চলা সামরিক অভিযানে গাজায় শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে সাধারণ নাগরিক ও বেসামরিক এলাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, ইসরায়েলি জনগণের বড় অংশ এই অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, গাজার বর্তমান পরিস্থিতি নেটানিয়াহুর সামরিক নীতিকে আরও দৃঢ় করে তুলেছে।
সংঘর্ষের প্রভাব শুধুমাত্র ভূ-রাজনৈতিক নয়, মানবিক ক্ষেত্রেও গভীর। আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া এবং চাপ
যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ নেটানিয়াহুর সামরিক অভিযানের ওপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছে। বিশেষ করে তুরস্ক ও কাতারের মতো দেশগুলো আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে ইসরায়েল এই উদ্যোগকে সীমিত রাখার চেষ্টা করছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক চাপ যতই বৃদ্ধি পাক না কেন, ইসরায়েলি জনমতের সমর্থন নেতানিয়াহুর সামরিক নীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
গাজার যুদ্ধের এই পরিস্থিতি ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নেতানিয়াহুর অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে। দেশটির ন্যাশনাল পার্লামেন্ট এবং রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা উল্লেখ করছেন, সামরিক শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি এখন জাতীয় মনোভাবের প্রতিফলন হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ তিনি হামাসবিরোধী অবস্থানে দৃঢ়। আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার মুখে থাকলেও দেশের মধ্যে জনমতের সমর্থন তার নীতি চালিয়ে যাওয়ার পথে প্রধান অবলম্বন হিসেবে কাজ করছে।
ভবিষ্যৎ প্রভাব এবং সম্ভাবনা
গাজার সামরিক অভিযানের অব্যাহততা এবং নেতানিয়াহুর অবস্থান ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে ফিলিস্তিনি প্রশাসন ও হামাসের মধ্যকার দ্বন্দ্বের ফলে স্থানীয় জনজীবনে অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনাও গুরুত্বপূর্ণ। নেটানিয়াহুর পদক্ষেপগুলো শুধু ইসরায়েলি নিরাপত্তা নয়, পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য প্রভাব ফেলবে।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় হামাসকে লক্ষ্য করে সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার মাধ্যমে ইসরায়েলিদের সমর্থন অর্জন করেছেন। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে তার নীতি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে শক্তিশালী করছে। গাজার পরিস্থিতি এবং নেতানিয়াহুর পদক্ষেপ ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
এম আর এম – ২০০২,Signalbd.com



