শিক্ষা

পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে ২০২৬ সালের এইচএসসি মে-জুনে

Advertisement

২০২৬ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষা আগামী বছরের মে অথবা জুন মাসে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানায়, এবার পরীক্ষাগুলো পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে এবং পূর্ণ নম্বরেই নেওয়া হবে। করোনা-পরবর্তী সময়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো শিক্ষার্থীরা আবার সম্পূর্ণ সিলেবাস অনুযায়ী পরীক্ষা দেবে।

এনসিটিবির ঘোষণা

শনিবার এনসিটিবির এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাস ২০২৪ সালের আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হয়েছিল। সেই শিক্ষার্থীরাই ২০২৬ সালের মে-জুনে এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেবে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রতিটি বিষয়ে পূর্ণ নম্বরের ভিত্তিতে এবং নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন হবে।

সংক্ষিপ্ত সিলেবাস থেকে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে ফেরা

করোনা মহামারির কারণে কয়েক বছর ধরে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট অধ্যায় বা অংশ বাদ দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিল। এর ফলে অনেকেই স্বল্প সময়ে প্রস্তুতি নিতে পেরেছে। তবে সমালোচনার মুখে কর্তৃপক্ষ আবার পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়।
শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া শিক্ষার্থীদের জ্ঞান যাচাইয়ে বেশি কার্যকর হবে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিতেও এটি সহায়ক হবে।

পরীক্ষার ধরন ও সময়সূচি

২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ের পূর্ণ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে। অর্থাৎ, বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ পাঠ্যবই থেকে প্রশ্ন করা হবে।
এনসিটিবি জানায়, সময়সূচি আগেভাগেই শিক্ষা বোর্ডগুলোতে পাঠানো হবে, যাতে প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে। পরীক্ষাগুলো মে অথবা জুন মাসে শুরু হয়ে নিয়মিত সময়ের মধ্যেই শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নিয়ে উদ্বেগ ও প্রত্যাশা

পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে ফেরায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছে, এটি শিক্ষার্থীদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে, বিশেষ করে যারা আগে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পড়াশোনা করেছে। আবার অনেকে মনে করছে, পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা দিলে তাদের জ্ঞানের গভীরতা ও প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বাড়বে।
একজন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী জানান, “পূর্ণ সিলেবাসে পরীক্ষা কঠিন হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় এটি আমাদের অনেক সুবিধা দেবে।”

শিক্ষকদের ভূমিকা

শিক্ষকরা মনে করছেন, পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা আয়োজন শিক্ষার্থীদের জন্য উপকারী হলেও তাদের বাড়তি পরিশ্রম করতে হবে। স্কুল ও কলেজগুলোকে নিয়মিত ক্লাস পরিচালনা করতে হবে এবং প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত ক্লাস নিতে হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের অনুশীলন ও মূল্যায়নের জন্য বিভিন্ন মডেল টেস্ট আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

অভিভাবক ও শিক্ষা বিশ্লেষকদের মতামত

অনেক অভিভাবক মনে করছেন, পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে এর সুফল পাওয়া যাবে। শিক্ষা বিশ্লেষকরা বলছেন, পূর্ণ সিলেবাসে পরীক্ষা শিক্ষাব্যবস্থার মানোন্নয়নে সহায়ক হবে। তারা আরও মনে করিয়ে দেন, শুধু সিলেবাস পূর্ণ করা নয়, শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখাও জরুরি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, ২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষার সফল আয়োজনের পর ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে পূর্ণ সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ কমাতে ক্লাসে নতুন শিক্ষণ-পদ্ধতি যুক্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।

পরিশেষে

পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে ২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজন শিক্ষার্থীদের জন্য যেমন চ্যালেঞ্জ, তেমনি সুযোগও। এটি তাদের জ্ঞান ও দক্ষতার পরিধি বিস্তৃত করবে এবং উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুত করবে। এখন দেখার বিষয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে শিক্ষার্থীদের এই পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত করে এবং শিক্ষার্থীরা কতটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

এম আর এম – ১০০৪, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button