সৌদি আরবে এক সপ্তাহের মধ্যে ২২ হাজার ৬১৩ জন অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, অভিযানের মূল কারণ ছিল আবাসন, শ্রম ও সীমান্ত সুরক্ষা আইন লঙ্ঘন। এ ঘটনায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি চালিয়ে আইনভঙ্গকারী অভিবাসীদের শনাক্ত করেছে।
সৌদি আরবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উল্লেখ করেছে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই ইথিওপিয়ান ও ইয়েমেনি নাগরিক।
অভিযানের বিস্তারিত তথ্য
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৬ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত অভিযান পরিচালিত হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে:
- আবাসন আইন লঙ্ঘন: ১৩,৬৫২ জন
- সীমান্ত নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন: ৪,৩৯৪ জন
- শ্রম আইন লঙ্ঘন: ৪,৫৬৭ জন
এছাড়া, অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করা ১,৬৯৯ জনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি, সৌদি আরব থেকে প্রবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
প্রত্যাবাসন ও আইনগত প্রক্রিয়া
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১৪,০৩৯ জনকে ইতিমধ্যেই তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর বাইরে, আরও ৩,৯৩৯ জনের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। গ্রেফতার হওয়া প্রবাসীদের ভ্রমণের প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ এবং তাদের নিজ নিজ কূটনৈতিক মিশনে প্রেরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে, অবৈধভাবে প্রবেশ বা সীমান্ত পেরোনোকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানা দেওয়ার বিধান রয়েছে।
প্রভাবিত দেশের চিত্র
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৯৯ শতাংশই প্রধানত দুই দেশের—ইথিওপিয়া ও ইয়েমেন। বাকী ১ শতাংশ অন্যান্য দেশের নাগরিক। দেশের নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক করেছেন, যারা আইন লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ধরনের অভিযান সৌদি আরবে থাকা প্রবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে নিয়মিতভাবে চালানো হয়।
সৌদি আরবে প্রতিবছর কোটি কোটি অভিবাসী শ্রমিক কর্মরত থাকেন। তবে অবৈধভাবে প্রবেশ বা বসবাসের ঘটনা দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিয়মিত সতর্ক করে। ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত দেশে এই ধরনের অভিযান বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আইন লঙ্খনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্কতার বার্তা দিচ্ছে।
পূর্ববর্তী অভিযানগুলিতে অভিবাসীদের আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রত্যাবাসন এবং জরিমানা প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষক মতামত
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সৌদি আরবে নিরাপত্তা ও শ্রম আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে, যা দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও শ্রম বাজারকে সুরক্ষিত রাখছে। তারা আরও বলেন, এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে পরিচালনা করলে প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং আইন লঙ্খনের ঘটনা কমে আসে।
এছাড়া, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও অভিবাসী সংগঠনগুলোরও সতর্কবার্তা রয়েছে, যাতে গ্রেফতারকৃতদের মানবাধিকার রক্ষা করা হয়।
সৌদি আরবে এক সপ্তাহে ২২ হাজারের বেশি অভিবাসীকে গ্রেফতার করা এবং ৯৯ শতাংশকে দুই দেশের নাগরিক হিসেবে শনাক্ত করা আন্তর্জাতিক শ্রম ও অভিবাসন নীতি নিয়ে নতুন দৃষ্টিকোণ প্রদান করছে। দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর থাকায় ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযান আরও কার্যকর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, প্রবাসীদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইন মেনে চলা নিশ্চিত করতে এসব অভিযান গুরুত্বপূর্ণ।
এম আর এম – ১৯৫৯,Signalbd.com



