
আসন্ন এশিয়া কাপে ভারতীয় ক্রিকেট দল প্রধান স্পনসর ছাড়াই মাঠে নামতে যাচ্ছে। অনলাইন গেমিং সংস্থা ড্রিম ১১ চুক্তি থেকে সরে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিসিসিআই নতুন স্পনসর খুঁজতে আগ্রহীদের জন্য এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট প্রকাশ করেছে। ভারতের প্রথম ম্যাচ শুরু হচ্ছে ১০ সেপ্টেম্বর, তবে নতুন স্পনসর নির্বাচনের সময়কাল সীমিত।
স্পনসরশিপ ছাড়ার ঘটনা
গত মাসে ড্রিম ১১ তাদের চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। মূল চুক্তিটি ২০২৬ পর্যন্ত বৈধ থাকার কথা ছিল এবং এর আর্থিক মূল্য প্রায় ৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতের সরকারি অনলাইন গেমিং নিয়ন্ত্রণ ও প্রচার সংক্রান্ত নতুন আইন রিয়েল-মানি গেমিং নিষিদ্ধ করায় ড্রিম ১১ স্পনসরশিপ থেকে সরে যায়।
বিসিসিআই স্পষ্ট জানিয়েছে যে, নতুন স্পনসরশিপে অ্যালকোহল, জুয়া, ক্রিপ্টোকারেন্সি বা নৈতিকতার প্রতি আঘাতকারী কোনো সংস্থা বিড করতে পারবে না।
বিসিসিআইয়ের পদক্ষেপ
বিসিসিআই মঙ্গলবার নতুন স্পনসর খুঁজতে আগ্রহীদের জন্য এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট প্রকাশ করেছে। আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে এবং ১৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিড জমা দিতে হবে।
তবে সমস্যা হলো, এশিয়া কাপ ৯ সেপ্টেম্বর শুরু হচ্ছে, যার মানে ভারতের দল ম্যাচে নামার সময় নতুন স্পনসর পাওয়া কঠিন হতে পারে।
পূর্ববর্তী স্পনসরশিপ ইতিহাস
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এর আগে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। ২০১৯ সালে মোবাইল কোম্পানি ওপ্পো মাঝপথে চুক্তি ভেঙে দেয়। তখন স্থান পূরণ করে শিক্ষাপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বাইজুস। ২০২৩ সালে ড্রিম ১১ তিন বছরের জন্য স্পনসর হয়। এই ঘটনা আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে, স্পনসরশিপ চুক্তিতে ঝুঁকি থাকতে পারে।
এশিয়া কাপের ম্যাচ সূচি
ভারতীয় দল ৪ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছাবে। গ্রুপ এ-তে তারা রয়েছে ওমান, পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে।
- ১০ সেপ্টেম্বর: দুবাইয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ
- ১৪ সেপ্টেম্বর: পাকিস্তানের বিপক্ষে
- ১৯ সেপ্টেম্বর: আবুধাবিতে ওমানের মুখোমুখি
গ্রুপ বি-তে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, হংকং ও শ্রীলঙ্কা রয়েছে। প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল সুপার ফোরে উঠবে এবং ২৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
স্পনসর ছাড়া খেলা ভারতের জন্য আর্থিক ও ব্র্যান্ডের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদিও খেলোয়াড়রা মানসিকভাবে প্রস্তুত, তবে স্পনসরশিপ না থাকায় ম্যাচের প্রচারণা এবং লোগো, প্রচারমূলক কার্যক্রমে প্রভাব পড়তে পারে।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “টিমের পারফরম্যান্স স্পন্সরের চাপে নয়, খেলোয়াড়রা মাঠে মনোযোগী থাকলে প্রভাব কম হবে।”
বিসিসিআইয়ের সতর্কতা ও নীতিমালা
বিসিসিআই নতুন স্পনসর নির্বাচনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নীতিমালা বলেছে। কোনো সংস্থা যার ব্যবসা নৈতিকতার সঙ্গে বিরোধপূর্ণ বা নিয়ন্ত্রিত নয়, তারা বিড করতে পারবে না। এতে বোর্ডের সতর্কতা প্রতিফলিত হচ্ছে, যাতে দল মাঠে নেমেও সমালোচনার মুখে না পড়ে।
বিশ্লেষণ
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারতীয় দলের এশিয়া কাপ পারফরম্যান্স স্পনসরশিপের চাপে নয়, খেলোয়াড়দের প্রস্তুতি এবং দলগত সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করবে। তবে সংক্ষিপ্ত সময়ে নতুন স্পনসর পাওয়া সম্ভব হবে কি না, তা বোর্ডের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
এছাড়া, মিডিয়া এবং প্রচারণার জন্য স্পন্সরের অনুপস্থিতি দলের ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিংয়ে সীমাবদ্ধতা আনতে পারে।
ভারতীয় ক্রিকেট দল স্পনসর ছাড়া মাঠে নামার প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে। তবে সংক্ষিপ্ত সময়ে নতুন স্পনসর নির্বাচন এবং লোগো, প্রচারমূলক কার্যক্রম সামলানো হবে বড় চ্যালেঞ্জ। টিমের পারফরম্যান্স মাঠের প্রস্তুতি এবং মানসিক দৃঢ়তার ওপর নির্ভর করবে।
এম আর এম – ১১৫২, Signalbd.com