বিশ্ব

পাক সেনাদের মেরে প্যান্টও খুলে নিয়ে এলো তালেবানরা!

Advertisement

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় সাম্প্রতিক সংঘাত নতুন মাত্রা পেয়েছে। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত কাবুল ও কান্দাহারের সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের হামলার খবর পাওয়া গেছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় তালেবান বাহিনী স্পিন-বোলদাক চৌকি দখল করে। ঘটনাস্থল থেকে পাকিস্তানি সেনাদের পরিত্যক্ত সামরিক সরঞ্জাম এবং প্যান্ট জব্দ করেছে তালেবান।

আফগান সাংবাদিক দাউদ জুনবিশ সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি শেয়ার করেছেন, যেখানে তালেবানরা পাকিস্তানি সীমান্ত ফাঁড়ি থেকে উদ্ধার করা পরিত্যক্ত প্যান্ট ও অস্ত্র প্রদর্শন করছে।

হামলার প্রেক্ষাপট

সীমান্তের উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আফগান তালেবান এবং পাকিস্তানি সেনাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা। পাকিস্তানি বিমান হামলার পর তালেবানরা স্পিন-বোলদাক চৌকিতে প্রবেশ করে এবং পাকিস্তানি সৈন্যদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করে।

কান্দাহারের স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, সীমান্ত অঞ্চলে এই ধরনের সংঘর্ষের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা প্রভাবিত হচ্ছে। তবে কাবুল, আফগানিস্তানের মধ্যাঞ্চল ও উত্তরের শহরগুলোতে এখনো জীবনযাত্রা স্বাভাবিক।

তালেবানের পাল্টা আক্রমণ

আফগানিস্তানের ইসলামি আমিরাতের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, পাল্টা হামলায় তালেবান বাহিনী অনেক পাকিস্তানি সেনাকে পরাজিত করেছে এবং কয়েকটি সামরিক স্থাপনা দখল করেছে। তালেবানরা তাদের হাতে থাকা ট্যাংক এবং অন্যান্য অস্ত্র নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনেছে।

মুজাহিদ জানান, আফগান বাহিনী স্পিন-বোলদাক এলাকায় পাকিস্তানি স্থাপনার বেশিরভাগ ধ্বংস করেছে। এর ফলে পাকিস্তানি সেনাদের কিছু অংশ আফগানিস্তান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে।

পরিত্যক্ত সামরিক সরঞ্জাম ও প্রতীকী জব্দ

তালেবান বাহিনী পাকিস্তানি সীমান্ত ফাঁড়ি থেকে উদ্ধার করা প্যান্ট এবং অস্ত্র প্রদর্শন করেছে। সাংবাদিক দাউদ জুনবিশের শেয়ার করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তালেবান যোদ্ধারা পরিত্যক্ত সামরিক সরঞ্জাম এবং প্যান্টের প্রদর্শনী করছেন।

স্থানীয়রা এটি আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় নাংরাহার প্রদেশে প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, “প্রয়োজনে আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে মুজাহিদিন এবং তালেবান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেব।”

হতাহতের তথ্য

আফগান সরকারের দাবি অনুযায়ী, পাকিস্তানি হামলায় অন্তত ১২ থেকে ১৫ জন নিহত এবং প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই গুরুতর। পাল্টা হামলায় তালেবান বাহিনী অনেক পাকিস্তানি সেনা নিহত করেছে। যদিও নিহত পাকিস্তানি সেনাদের সংখ্যা এখনও নিশ্চিত নয়।

পাকিস্তান সীমান্তে এই সংঘাতের কারণে গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিংগুলো বন্ধ রয়েছে। আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে সবজিসহ অন্যান্য পণ্য যাচ্ছে না, একইভাবে পাকিস্তান থেকেও কাঁচামাল আসছে না। এর ফলে কাবুলে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ

পাকিস্তান সরকারের পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছেন, তালেবানের অনুরোধে সীমান্ত এলাকায় অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রয়োগ করা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চেষ্টার কথা বলা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সীমান্তে এই ধরনের সংঘাত পূর্ববর্তী যুদ্ধবিরতির ওপর প্রভাব ফেলেছে। দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে অর্থনীতি ও নাগরিক জীবনে প্রভাব পড়তে পারে।

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া

কান্দাহারের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সীমান্ত সংঘাতের কারণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে তারা আফগান বাহিনী ও তালেবানের সাফল্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগান বাহিনী শক্ত অবস্থানে রয়েছে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।

তালেবানের পাল্টা হামলার ফলে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে স্থানীয়দের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আফগান বাহিনীর সঙ্গে সংহতি দেখিয়েছে।

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্তে সাম্প্রতিক সংঘাত ও তালেবানের পাল্টা হামলা নতুন মাত্রা পেয়েছে। পাকিস্তানি সেনাদের পরিত্যক্ত প্যান্ট ও সামরিক সরঞ্জাম জব্দের ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও গুরুত্বপূর্ন করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, দুই দেশের মধ্যে এই ধরনের উত্তেজনা সীমান্ত এলাকায় সামরিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের নজর রাখা প্রয়োজন যে, ভবিষ্যতে এই সংঘাত কীভাবে মোড় নেবে।

এম আর এম – ১৭৯৭,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button