ইরানের হুঁশিয়ারি: পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা হলে যুদ্ধ বেধে যেতে পারে
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, যদি ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে কোনো হামলা হয়, তাহলে তা আঞ্চলিকভাবে সর্বাত্মক যুদ্ধের কারণ হতে পারে। তিনি আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই হুঁশিয়ারি জানান।
কাতার সফর ও সাক্ষাৎকার
কাতার সফরের সময় আল জাজিরা অ্যারাবিককে সাক্ষাৎকারে আব্বাস আরাগচি বলেন, “ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালানো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি ঐতিহাসিক ভুল হবে।” তিনি আরও বলেন, “যেকোনো হামলার জবাব ‘তাৎক্ষণিক ও চূড়ান্তভাবে’ দেওয়া হবে, যা অঞ্চলে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করবে।”
ট্রাম্পের সম্ভাব্য ভূমিকা
আব্বাস আরাগচি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালানোর জন্য উৎসাহিত করতে পারেন।
কাতারের সঙ্গে আলোচনা
কাতারে অবস্থানকালে আরাগচি কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান বিন জসিম আল থানির সঙ্গে আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “গাজায় যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে কাতারের মধ্যস্থতাকে আমরা অত্যন্ত সাধুবাদ জানাই। আশা করি, অন্যান্য সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”
হামাসের সঙ্গে বৈঠক
কাতারে অবস্থানকালে হামাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আরাগচি। তিনি বলেন, “গাজায় ইসরায়েলের বিধ্বংসী যুদ্ধের পরও ফিলিস্তিনিরা বিজয় অর্জন করেছে।”
গাজায় সংঘাতের পরিণতি
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। এই হামলায় কমপক্ষে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হয় এবং ২ শতাধিক মানুষকে জিম্মি করা হয়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করে, যা এখনও চলছে। এই হামলায় ৪৭ হাজার ৪০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে গাজা উপত্যকা অনেকটাই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার একটি বড় অংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। পারমাণবিক কেন্দ্রের নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশ্ব সম্প্রদায়কে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।