
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রোস্টেট ক্যান্সারের চিকিৎসার অংশ হিসেবে বর্তমানে রেডিয়েশন থেরাপি নিচ্ছেন। তার মুখপাত্র শনিবার (১১ অক্টোবর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বাইডেনের চিকিৎসা পরিকল্পনায় হরমোন থেরাপি ও রেডিয়েশন থেরাপি দুটোই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
চিকিৎসার বিস্তারিত
৮২ বছর বয়সী বাইডেনের রেডিয়েশন থেরাপি পাঁচ সপ্তাহব্যাপী চলবে। ইতিমধ্যে তিনি হরমোনজাত ওষুধ গ্রহণ শুরু করেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রোস্টেট ক্যান্সারটি হরমোন-সংবেদনশীল হলেও আক্রমণাত্মক প্রকৃতির, তাই নিয়মিত চিকিৎসা অপরিহার্য।
গত মাসে বাইডেন ত্বকের ক্যান্সার অপসারণের জন্য ‘মোহস সার্জারি’ করান। অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেন যে, সমস্ত ক্যান্সারযুক্ত টিস্যু সফলভাবে অপসারণ হয়েছে এবং অতিরিক্ত চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।
২০২৩ সালে, বাইডেন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তার ত্বকে একটি ক্ষত ধরা পড়ে, যা পরবর্তীতে ক্যান্সার হিসেবে শনাক্ত হয়। সেই সময় চিকিৎসকরা অতিরিক্ত চিকিৎসার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছিলেন। তবে গত মে মাসে তার প্রোস্টেট ক্যান্সার শনাক্ত হয়, যা চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
বাইডেনের ব্যক্তিগত মন্তব্য
এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ বাইডেন লিখেছিলেন, “ক্যান্সার আমাদের সবাইকে ছুঁয়ে যায়। আমরাও শিখেছি, ভাঙনের মধ্যেই আমাদের শক্তি। ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।” তার এই মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, ব্যক্তিগত মানসিক শক্তি ও সমর্থন তাকে চিকিৎসার যাত্রায় উৎসাহ যোগাচ্ছে।
চিকিৎসা পদ্ধতি ও বিশেষজ্ঞ মতামত
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রেডিয়েশন থেরাপি ক্যান্সার কোষ ধ্বংসে কার্যকর। হরমোন থেরাপি ক্যান্সার বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রোস্টেট ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এটি আধুনিক চিকিৎসার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির নির্দেশনা অনুযায়ী, ৫০ থেকে ৬৯ বছর বয়সী পুরুষদের প্রতি দুই বছর অন্তর প্রোস্টেট স্ক্রিনিং করা হয়। বাইডেন তার সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষায় স্ক্রিনিং করিয়েছেন কিনা, তা জানা যায়নি।
বাইডেনের ক্যান্সার ও চিকিৎসার খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবরের শিরোনামে এসেছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, সাবেক প্রেসিডেন্টের এই খবর সাধারণ মানুষের ক্যান্সার সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে।
চিকিৎসার ভবিষ্যৎ ও অগ্রগতি
চিকিৎসকরা আশা করছেন, নিয়মিত রেডিয়েশন ও হরমোন থেরাপি বাইডেনের রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখবে। চিকিৎসার অগ্রগতি অনুযায়ী, তার শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
বাইডেনের বর্তমান অবস্থান
গত জানুয়ারিতে বাইডেন হোয়াইট হাউস ছাড়েন। পুনর্নির্বাচনে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসকে সমর্থন জানান। তার বয়স ও মানসিক সক্ষমতা নিয়ে নানা সমালোচনার পরেও তিনি চিকিৎসা গ্রহণে সচেতন এবং সক্রিয়।
সমাজ ও জনমত
বাইডেনের ক্যান্সারের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সাধারণ মানুষ এবং সমর্থকরা সামাজিক মাধ্যমে তার দ্রুত সুস্থতার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জনসচেতনতা ও সমর্থন রোগীর মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে এবং চিকিৎসার প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিকিৎসা প্রক্রিয়া, তার মানসিক দৃঢ়তা ও আধুনিক চিকিৎসার সংমিশ্রণ ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ে একটি শিক্ষণীয় উদাহরণ তৈরি করেছে। চিকিৎসা চলাকালীন তিনি যে ধরনের মনোবল দেখাচ্ছেন তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রভাব ফেলে।
এম আর এম – ১৭৩১,Signalbd.com