
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় পদ্মা নদী থেকে ধরা পড়েছে একটি বিশাল কাতল মাছ। ১৯ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের এই মাছটি স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা ৪৪ হাজার ১৬০ টাকায় কিনে নিয়েছেন। মাছটি ধরা পড়ে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বুধবার দুপুরে, মানিকগঞ্জ জেলার জাফরগঞ্জ এলাকার জেলে সোনাই হালদারের জালে।
পদ্মা নদীতে বিরল ও বড় কাতল মাছের সন্ধান
পদ্মা নদী বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান নদী হলেও, এখানে বড় আকারের কাতল মাছের দেখা মেলা বেশ বিরল। এই ধরনের বড় মাছ সাধারণত উজান থেকে ভাটির দিকে চলে আসে, বিশেষ করে বর্ষাকালে। তবে, এই মাছটি ধরা পড়ার ঘটনা স্থানীয় মৎস্যজীবী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
মাছটি ধরা পড়ার প্রক্রিয়া
জেলে সোনাই হালদার ও তার সঙ্গীরা সকালে পদ্মা নদীর কলাবাগান এলাকায় জাল ফেলে মাছ ধরতে যান। উজানের পানি ভাটিতে চলে আসার কারণে মাছ ধরার জন্য এটি ছিল উপযুক্ত সময়। তাদের জালে ধরা পড়ে বিশাল আকৃতির কাতল মাছটি। মাছটি ধরা পড়ার পর, সোনাই হালদার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে দৌলতদিয়া ৫ নং ফেরিঘাট এলাকার আনোয়ার খাঁর আড়তে নিয়ে আসেন।
উন্মুক্ত নিলামে বিক্রি
আনোয়ার খাঁর আড়তে মাছটি উন্মুক্ত নিলামে তোলা হয়। প্রতি কেজি ২ হাজার ৩০০ টাকায় মোট ৪৪ হাজার ১৬০ টাকায় মাছটি কিনে নেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা। তিনি বলেন, “মাছটি বিক্রির জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হচ্ছে। কেজি প্রতি ৫০ টাকা লাভ হলে মাছটি বিক্রি করে দিব।”
স্থানীয় মৎস্যজীবীদের জন্য আশার বার্তা
এই বড় মাছ ধরা পড়ার ঘটনা স্থানীয় মৎস্যজীবীদের জন্য আশার বার্তা নিয়ে এসেছে। তারা আশা করছেন, বর্ষাকালে পদ্মা নদীতে আরও বড় মাছ ধরা পড়বে। এতে তাদের আয় বৃদ্ধি পাবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
পদ্মা নদীর জীববৈচিত্র্য ও সংরক্ষণ
পদ্মা নদী বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, পাখি ও জলজ উদ্ভিদ বাস করে। তবে, অবৈধ মাছ শিকার, দূষণ ও নদী ভরাটের কারণে এই জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নদীর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
রাজবাড়ী জেলার মৎস্য খাতের উন্নয়ন
রাজবাড়ী জেলা মৎস্য খাতের জন্য পরিচিত। এখানে বিভিন্ন ধরনের মাছ চাষ ও মাছ ধরার কাজ হয়। স্থানীয় প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর মৎস্য খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে মাছ চাষে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
ভবিষ্যতে পদ্মা নদীর উন্নয়ন
পদ্মা নদীর উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নদী খনন, বাঁধ নির্মাণ ও নদী তীর রক্ষায় কাজ চলছে। এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে নদীর পরিবেশ উন্নত হবে এবং মৎস্যজীবীদের আয় বৃদ্ধি পাবে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় ধরা পড়া ১৯ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের কাতল মাছটি পদ্মা নদীর জীববৈচিত্র্যের একটি উদাহরণ। এটি স্থানীয় মৎস্যজীবীদের জন্য আশার বার্তা নিয়ে এসেছে। তবে, নদীর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
MAH – 12744, Signalbd.com