বিশ্ব

‘ঘুষ নিতে’ সহকারী নিয়োগ, বেনাপোলের রাজস্ব কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

Advertisement

বেনাপোল কাস্টম হাউসের এক রাজস্ব কর্মকর্তাকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানের সময় তাঁর সহকারীও ধরা পড়েছেন, যিনি অভিযোগ অনুযায়ী রাজস্ব কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহণের প্রক্রিয়ায় সহায়তা করতেন।

দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানান, রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ও তাঁর সহযোগী হাসিবুর রহমানকে আটক করা হয়েছে। দুজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারের পদ্ধতি

গত সোমবার ছদ্মবেশে দুদকের একটি আভিযানিক দল বেনাপোল কাস্টম হাউসের আশপাশে অভিযান চালায়। অভিযোগ ছিল, শামীমা আক্তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমদানি পণ্যের শুল্ক মওকুফ করে দিয়ে নিয়মিত ঘুষ নিতেন। এই ঘুষের প্রক্রিয়ায় তার সহকারী হাসিবুর রহমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন।

অভিযানকালে হাসিবুর রহমানকে ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ঘুষসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে বেনাপোল বন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ধৃত সহযোগীর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অর্থের লেনদেনের তথ্য দুদকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ আলামত হিসেবে আছে।

প্রাথমিক সংঘর্ষ ও জনরোষ

এক দিন আগে অভিযান চলাকালে শামীমা আক্তারকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। জনরোষের কারণে দুদক কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হন। শতাধিক মানুষ কাস্টম হাউসের প্রধান ফটকের সামনে একটি যানবাহন আটকে রাখে এবং ‘দুর্নীতিবাজ’ কর্মকর্তার মুক্তি প্রসঙ্গে প্রতিবাদ করে।

ঘটনার পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয় এবং অভিযুক্তদের আটক করা সম্ভব হয়। মঙ্গলবার যশোর শহরের কারবালা রোড এলাকা থেকে শামীমা আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হাসিবুর রহমানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ এবং ঘুষের টাকা অফিসে পাঠানোর প্রক্রিয়া স্বীকার করেছেন।

মামলার পরিস্থিতি

দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আসামিদের কাছ থেকে মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত ও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর পরবর্তী ধাপ হিসেবে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, রাজস্ব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, যিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমদানি পণ্যের শুল্ক মওকুফ করে নিয়মিত ঘুষ নিতেন। এই কর্মকাণ্ডে সহযোগী হিসেবে হাসিবুর রহমানের ভূমিকা ছিল অপরিহার্য।

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পরিবহন খাতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই গ্রেপ্তারের খবরকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করছেন, এর মাধ্যমে বেনাপোল বন্দর এবং কাস্টম হাউসে দুর্নীতি হ্রাস পাবে। একই সঙ্গে জনগণও আশা প্রকাশ করেছেন যে ভবিষ্যতে এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দৃষ্টান্তমূলক গ্রেপ্তার এমন একটি সংকেত দেয় যে ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এম আর এম – ১৬৭৪,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button