
জাতীয় দলে অনুপস্থিত থাকলেও সাকিব আল হাসানকে ঘিরে এখনো রয়েছে সমান কৌতূহল। গ্লোবাল টি-টোয়েন্টিতে দারুণ পারফরম্যান্সের পর, বিসিবি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—সাকিব ফিরতে চাইলে দরজা খোলা রয়েছে। এখন সিদ্ধান্ত নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের হাতে।
কী বলছে বিসিবি?
বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু বলেন, “বাংলাদেশের গ্রেটেস্ট ক্রিকেটার হচ্ছেন সাকিব আল হাসান। তার জন্য জাতীয় দলের দরজা সবসময় খোলা।”
তবে তিনি এটাও স্পষ্ট করেন যে, সিদ্ধান্ত এখন নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর নির্ভর করছে। মিঠু আরও জানান, “বর্তমান বিসিবি সভাপতি দায়িত্ব দিয়েছেন ক্রিকেট অপারেশন্স ও নির্বাচকদের। তারাও বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন।”
অর্থাৎ, সাকিবের জাতীয় দলে ফেরা এখন সময়ের ব্যাপার, যদি তিনি নিজে আগ্রহ দেখান।
কেন সাকিব দলের বাইরে?
২০২৪ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হওয়ার পর থেকেই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন সাকিব। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকারের পতনের পর, নিরাপত্তা ইস্যুতে দেশে ফেরা সম্ভব হয়নি তার।
ভারতের বিপক্ষে সেপ্টেম্বরে শেষ টেস্ট খেলার পর থেকে তাকে আর জাতীয় দলে দেখা যায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের আগে শেষ মুহূর্তে দেশে ফেরার কথা থাকলেও, নিরাপত্তা উদ্বেগে সেখান থেকেও ফিরে যান দুবাইয়ে।
এর মাঝে বোলিং অ্যাকশনে নিষেধাজ্ঞা, ব্যক্তিগত ব্যস্ততা ও বিদেশি লিগে অংশগ্রহণ, সব মিলিয়ে জাতীয় দলে অনুপস্থিত সাকিব।
বর্তমানে কেমন পারফর্ম করছেন সাকিব?
গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে অভিষেক ম্যাচেই আলো ছড়িয়েছেন সাকিব।
ব্যাট হাতে ৩৭ বলে ৫৮ রান এবং বল হাতে মাত্র ১৩ রানে ৪ উইকেট—এই পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন তিনি। এমন দারুণ পারফরম্যান্সের পর, ক্রিকেটপ্রেমীদের মুখে-মুখে ঘুরছে প্রশ্ন—সাকিব কি ফিরছেন?
তবে পরবর্তী ম্যাচে পারফরম্যান্সে কিছুটা ভাটা পড়ে। অস্ট্রেলিয়ার হোবার্ট হারিকেনসের বিপক্ষে মাত্র ৭ রান করে আউট হন এবং বোলিংয়ে ৪ ওভারে উইকেটশূন্য থেকে ৩৪ রান দেন।
জাতীয় দলের প্রেক্ষাপট: অভাববোধ এখনও আছে
বর্তমানে বাংলাদেশের দল নতুন মুখ ও তরুণদের নিয়ে গঠিত হলেও, অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বের অভাব প্রকট।
বিশেষ করে চাপের ম্যাচে কেউই সাকিবের মতো ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য দেখাতে পারছেন না। টিম ম্যানেজমেন্টও এই ঘাটতি উপলব্ধি করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তাই ক্রিকেট বিশ্লেষকরা বলছেন—সাকিব যদি ফিট ও আগ্রহী থাকেন, তাহলে তাকে দলে ফেরানো সময়ের দাবী।
বিশ্লেষকদের মত: সাকিব ফিরলে দলের লাভ কী?
ক্রিকেট বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাকিবের ফেরা হলে দলের ভারসাম্য বাড়বে।
বিপক্ষের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে, অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের দরকার। সাকিব তার অলরাউন্ড দক্ষতা, কৌশলগত নেতৃত্ব এবং বিপজ্জনক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতার জন্য অমূল্য।
সাবেক অধিনায়করা বলছেন, সাকিব থাকলে তরুণ খেলোয়াড়রাও আরও আত্মবিশ্বাসী হয়।
“বাংলাদেশের গ্রেটেস্ট ক্রিকেটার হচ্ছেন সাকিব আল হাসান। তার জন্য জাতীয় দলের দরজা সবসময় খোলা”—ইফতেখার রহমান মিঠু, বিসিবি পরিচালক।
সারসংক্ষেপ
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বর্তমানে জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও, তাকে ঘিরে গুঞ্জন থামছেই না। গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর, জাতীয় দলে তার ফেরা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। ঠিক এমন সময় বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হলো—সাকিবের জন্য জাতীয় দলের দরজা সবসময় খোলা।
জাতীয় দলে সাকিবের ফেরা আপাতত নিশ্চিত না হলেও, বিসিবির পক্ষ থেকে ইতিবাচক বার্তা পাওয়া গেছে। নির্বাচকরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন, আর সাকিব নিজেও মাঠে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন—এমন আভাস মিলছে।
তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—সাকিব নিজে কী চান? তিনি যদি ফিরে আসার আগ্রহ দেখান, তাহলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে আবারও দেখা যেতে পারে এই মহানায়ককে।
শেষ কথা: সাকিবের মতো খেলোয়াড় এক প্রজন্মে একবারই আসে। সিদ্ধান্ত এখন তার হাতে—তিনি কি ফিরবেন, নাকি এই অধ্যায় এখানেই শেষ?
এম আর এম – ০৩০৭, Signalbd.com