
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, বিচারপতি মো. আলী রেজার নেতৃত্বে কমিটি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করবে।
কমিটি গঠনের ঘোষণা
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবারের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
আইন উপদেষ্টার মাধ্যমে নুরের স্ত্রী মারিয়া আক্তার, পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং গণঅধিকার পরিষদের নেতৃত্বের সঙ্গে সাক্ষাৎকালীন সময়ে এই তথ্য জানানো হয়।
বিচারপতি আলী রেজার নেতৃত্বাধীন এক সদস্য বিশিষ্ট কমিটি হামলার ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করবে। কমিটি ১৫ দিনের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে।
হামলার ঘটনা এবং প্রেক্ষাপট
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে গণঅধিকার পরিষদের একটি মিছিল যাওয়ার সময় এই ঘটনা ঘটেছে।
হামলায় নুরুল হক নুর গুরুতর আহত হন এবং তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত হওয়ার পর থেকে তার সুচিকিৎসা চলছে এবং প্রশাসন নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
হামলার প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার পর রাজনৈতিক মহল, নাগরিক সংগঠন এবং সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, “নুরের ওপর হামলার ঘটনা আমাদের সকলের জন্য দুঃখজনক। আমরা আশা করি দ্রুত সঠিক বিচার হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “নুরের সুচিকিৎসা এবং নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চলছে।”
তদন্ত কমিটির কাঠামো ও দায়িত্ব
বিচারপতি মো. আলী রেজার নেতৃত্বে গঠিত কমিটি এক সদস্য বিশিষ্ট হলেও এটি হামলার সমস্ত দিক যাচাই করবে। কমিটির দায়িত্বগুলো হলো:
- হামলার সময় এবং অবস্থান নির্ধারণ
- সম্ভাব্য যুক্তি ও প্রমাণ সংগ্রহ
- প্রত্যক্ষদর্শী ও অন্যান্য সাক্ষীদের বিবৃতি গ্রহণ
- ঘটনার কারণ এবং দায়প্রাপ্তদের শনাক্তকরণ
- ১৫ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ রিপোর্ট প্রদান
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
এই হামলা রাজনৈতিক সহিংসতার প্রতিফলন হিসেবেও দেখা হচ্ছে। নির্বাচনী পরিবেশ এবং রাজনৈতিক সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে এ ধরনের ঘটনা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য উদ্বেগজনক। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রশাসনের সতর্ক এবং নিরপেক্ষ ভূমিকা অপরিহার্য।
নাগরিক নিরাপত্তা এবং সমাজের প্রতিক্রিয়া
নাগরিক সমাজ এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করছেন। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সরকার কতটা কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। তবে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধ করতে সক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন।
পরিশেষে
নুরের ওপর হামলার ঘটনা ও এর পরবর্তী বিচার বিভাগীয় তদন্ত দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশের পর পরবর্তী পদক্ষেপ এবং দায়প্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ জনগণের নজরদারির মধ্যে থাকবে।
এ পরিস্থিতিতে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, তদন্ত প্রক্রিয়া কতটা দ্রুত এবং কার্যকর হবে এবং ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা রোধের জন্য কতটা সতর্ক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এম আর এম – ১১৫১, Signalbd.com