বিশ্ব

জাতিসংঘে গাজার ছবি প্রদর্শন করে এরদোগান বললেন “এটি পুরোপুরি গণহত্যা”

Advertisement

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান গাজার ক্ষুদ্রগৃহিণী ও শিশুবাস্তব চিত্র প্রদর্শন করে বলেন, এটি সম্পূর্ণ গণহত্যার প্রমাণ। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নীরবতা ভাঙার আহ্বান জানান এবং ইসরায়েলের প্রতি কঠোর নিন্দা জানান।

জাতিসংঘে বক্তব্য ও ছবি প্রদর্শন

এরদোগান নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে উপস্থিত হয়ে গাজার ক্ষুধার্ত ও হতভাগ্য মানুষদের ছবি দেখান। তিনি বলেন, “এই ছবি গাজার দৈনন্দিন জীবন এবং এর ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরে। এটি অন্যভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না। এটি পুরোপুরি গণহত্যা।”
তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, ইসরায়েলি হামলায় নিহত বেসামরিক নাগরিকদের জন্য জবাবদিহি প্রয়োজন। এরদোগান বলেন, ২৩ মাস ধরে গাজায় চলমান এই বর্বরতা মানবতার সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়।

গাজার মানবিক বিপর্যয়

প্রদর্শিত ছবিতে দেখা যায়, ক্ষুধার্ত নারী ও শিশু বালতি এবং হাঁড়ি ধরে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছেন। অন্য ছবিতে শিশুদের অনাহার এবং ওষুধের অভাবে মৃত্যুর দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে।
এরদোগান বলেন, “এটি দেখে কেউ চুপ থাকতে পারবে না। শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনও নীরব।” তিনি সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড ও গণমাধ্যম দমনকেও কঠোর সমালোচনা করেন।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান

প্রেসিডেন্ট এরদোগান জাতিসংঘে উপস্থিত দেশগুলোর কাছে গাজায় মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমরা সবাই নিজেদের বিবেককে প্রশ্ন করব—২০২৫ সালে কি এই বর্বরতার জন্য কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে পারে?”
এরদোগান বিশেষভাবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনেয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান এবং তাদের নৈতিক দায়িত্বের কথা স্মরণ করান।

গাজায় গণহত্যার প্রেক্ষাপট

গাজায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান সংঘাতের ফলে হাজার হাজার নিরপরাধ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। বিশেষত শিশু ও মহিলা জনগোষ্ঠী সবচেয়ে ভুক্তভোগী। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই ঘটনাকে যুদ্ধাপরাধের মতো চিহ্নিত করেছে।
এছাড়া, গাজার সমস্ত প্রবেশপথ বন্ধ করা হয়েছে। খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য মৌলিক সামগ্রীর অভাবে মানুষের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে।

মিডিয়া ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা

এরদোগান জাতিসংঘে উল্লেখ করেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২৫০-এর বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনা গাজার নৃশংসতা আড়াল করার চেষ্টা হিসেবে ধরা হচ্ছে। তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলা মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ।

রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক নেতা ও মানবাধিকার সংস্থা এরদোগানের বক্তব্যকে সমর্থন করেছে। তারা বলেন, গাজায় চলমান হিংসা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সতর্কবার্তা এবং অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন।
এদিকে কিছু দেশ ও রাজনৈতিক দল বিষয়টিকে রাজনীতিকভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলেও এরদোগান জোর দিয়ে বলেন, মানবতার জন্য নীরব থাকা গ্রহণযোগ্য নয়।

বিশ্লেষক মতামত

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এরদোগানের এই বক্তব্য গাজার পরিস্থিতির আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করবে। মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকরা অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে উৎসাহিত হবেন।
বিশ্লেষকরা আরও বলেন, এটি কেবল রাজনৈতিক বক্তব্য নয়; বাস্তব চিত্র এবং মানবিক সংকটকে তুলে ধরা হয়েছে।

জাতিসংঘে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের প্রদর্শিত ছবি ও বক্তব্য গাজার মানবিক বিপর্যয় ও গণহত্যার প্রমাণ হিসেবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা ভাঙার আহ্বান। রাজনৈতিক ও মানবিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই ধরনের কার্যক্রম গাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে এবং দ্রুত আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপকে উদ্দীপিত করবে।

এম আর এম – ১৪৯২,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button