বিশ্ব

ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হামাসকে পুরস্কৃত করবে: জাতিসংঘে ট্রাম্প

Advertisement

জাতিসংঘে ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে হামাসকে পুরস্কৃত করা। তিনি গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি করেছেন।

ট্রাম্পের ভাষণের বিস্তারিত

মঙ্গলবার জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে ট্রাম্প বলেন,

“যারা শান্তির পক্ষে, তাদের একসাথে হয়ে জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। কিছু সদস্য রাষ্ট্র একতরফাভাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করছে। এটি হামাসের নৃশংসতার জন্য একটি বড় পুরস্কার হবে।”

তিনি আরও বলেন, “গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করা প্রয়োজন। এমন পদক্ষেপ কেবল সহিংসতাকে উসকে দেবে এবং শান্তি প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”

ফিলিস্তিনি স্বীকৃতির পেছনের প্রেক্ষাপট

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্স ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। একই সঙ্গে ইউরোপের কয়েকটি দেশ—লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, মোনাকো ও বেলজিয়াম—এ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর আগে কানাডা, ব্রিটেন, পর্তুগাল ও অস্ট্রেলিয়াও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি মধ্যপ্রাচ্যে দ্বিরাষ্ট্র সমাধান প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত। তবে ট্রাম্প এই পদক্ষেপকে ‘ভুল বার্তা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

গাজা সংঘাত ও হামাসের প্রভাব

গাজায় দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের পেছনে হামাসের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্পের মতে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া মানে হামাসের জঙ্গিদের নৃশংসতা পুরস্কৃত করা। তিনি একাধিক দেশকে সতর্ক করেছেন, যে এই পদক্ষেপ শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংঘাত উত্তেজিত হলে সাধারণ মানুষ আরও বিপদে পড়তে পারে। তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্বিরাষ্ট্র সমাধান নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হতে হবে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

জাতিসংঘে ফিলিস্তিন স্বীকৃতির পদক্ষেপকে নানাভাবে দেখা হচ্ছে। কিছু দেশ এটিকে শান্তি প্রক্রিয়ার উন্নতির সুযোগ হিসেবে দেখছে, আবার কিছু দেশ ট্রাম্পের মতো এটিকে সংঘাত উসকে দেওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে মনে করছে।

মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বীকৃতি দেওয়ার পদক্ষেপ শুধুমাত্র রাজনৈতিক ইস্যু নয়, এটি জনগণের জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার মানুষদের নিরাপত্তা ও মানবিক পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হতে পারে।

বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সংস্থা ও শক্তিশালী দেশগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন। ট্রাম্পের বক্তব্য অনুযায়ী, একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে এটি শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে।

একজন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক বলেন, “ফিলিস্তিন স্বীকৃতি ও হামাসের সম্পর্ক নিয়ে বিবেচনা গুরুত্বপূর্ণ। ভুল বার্তা দিলে সংঘাত বাড়বে এবং রাজনৈতিক সমাধান কঠিন হবে।”

জাতিসংঘে ট্রাম্পের মন্তব্য বিশ্ব রাজনীতিতে ফিলিস্তিনি স্বীকৃতি ও হামাসের সম্পর্ক নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য এটি এক গুরুত্বপূর্ণ সংকেত, যে শান্তি প্রক্রিয়া রক্ষায় সাবধান ও সমন্বিত পদক্ষেপ অপরিহার্য।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি স্থাপনের জন্য দ্বিরাষ্ট্র সমাধান, আন্তর্জাতিক সমন্বয় এবং মানবিক সহযোগিতা অপরিহার্য হবে।

এম আর এম – ১৪৮৮,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button