বিশ্ব

ভারতে ছড়িয়েছে ‘মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা’, ১৯ জনের মৃত্যু

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালা রাজ্যে প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফালাইটিস (পিএএম) রোগে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিনা জর্জ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি একটি মারাত্মক মস্তিষ্ক সংক্রমণ এবং সাধারণভাবে ‘মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা’ নামে পরিচিত।

এই বছরের মধ্যে মোট ৬৯টি সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। কেরালা স্বাস্থ্য বিভাগ ইতোমধ্যেই জনসাধারণের জন্য সতর্কতা জারি করেছে।

সংক্রমণের কারণ

এই বিরল সংক্রমণের জন্য দায়ী নায়েগলেরিয়া ফোউলেরি নামের অ্যামিবা। এটি সাধারণত অযত্নে রাখা সুইমিং পুল, স্প্ল্যাশ প্যাড এবং অন্যান্য বিনোদনকেন্দ্রে পাওয়া যায়।

সিডিসি জানিয়েছে, এই অ্যামিবা মানুষের মস্তিষ্কে সংক্রমণ ঘটিয়ে মস্তিষ্কের টিস্যু ধ্বংস করতে সক্ষম। তাই এটিকে ‘মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা’ বলা হয়। সংক্রমণ হলে রোগীর অবস্থা দ্রুত খারাপ হতে পারে এবং মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি।

ঘটনা ও সরকারি পদক্ষেপ

কেরালায় এই সংক্রমণের ঘটনা নতুন নয়। প্রথমবার পিএএম ধরা পড়ে ২০১৬ সালে। গত এক দশকে বিভিন্ন স্থানে এ রোগের অল্প কিছু কেস শনাক্ত হয়েছে।

জর্জ জানিয়েছেন, রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সংক্রমণ রোধে জনসাধারণকে নিরাপদ জল ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় পুল এবং স্প্ল্যাশ প্যাডগুলো স্যানিটাইজেশন ও নিয়মিত তদারকির আওতায় আনা হচ্ছে।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

এই সংক্রমণ কেরালার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর চাপ সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে শিশু, কিশোর এবং সুইমিং পুল ব্যবহারকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

স্থানীয় চিকিৎসকরা বলছেন, রোগটি মারাত্মক হওয়ার কারণে সংক্রমিত হলে দ্রুত চিকিৎসা না পাওয়া পর্যন্ত প্রাণহানির সম্ভাবনা থাকে। রাজ্য সরকারের সতর্কতা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অবশ্যই ইতিবাচক পদক্ষেপ।

কেরালায় পিএএম সংক্রমণ আগে এবং পরে বিভিন্ন সময়ে ঘটেছে। ২০১৬ সালের পর থেকে প্রায় কিছু কেস সীমিতভাবে দেখা গেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সতর্কতা এবং নিয়মিত স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলজ পরিবেশ এবং সুইমিং পুলের অযত্ন সংরক্ষণ মূল কারণ। তাই সরকারি নিয়মকানুন কঠোরভাবে মানা এবং জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি অপরিহার্য।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

সিডিসি এবং স্থানীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ প্রতিরোধে নিরাপদ পানীয় এবং স্যানিটাইজড জল ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া জরুরি। এছাড়া জনসাধারণকে সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন করা প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিচ্ছেন যে, এই রোগ সাধারণত বিরল হলেও মারাত্মক। তাই দ্রুত প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হলে প্রাণহানি প্রতিরোধ সম্ভব।

কেরালায় ‘মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা’ সংক্রমণ ১৯ জনের মৃত্যু ঘটিয়েছে এবং এখনও সংক্রমণ ঘটছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সতর্কতা জারি করেছে, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিরাপদ জল ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দ্রুত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া এবং নিয়মিত তদারকি চালালে সংক্রমণ রোধ সম্ভব। তবে, জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধিই দীর্ঘমেয়াদে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি।

এম আর এম – ১৩৯৪,Signalbd.com

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button