বিশ্ব

নেপালে বাংলাদেশ টিম হোটেলের পাশের ভবনে অগ্নিসংযোগ, আতঙ্কে জামালরা

নেপালে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের মধ্যে। কাঠমান্ডুর একটি হোটেলের পাশে আন্দোলনকারীরা একটি ভবনে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছে।幸া ঘটনায় দলের খেলোয়াড়রা আতঙ্কিত হলেও, হোটেলে তারা নিরাপদে অবস্থান করছে বলে নিশ্চিত করেছেন কর্মকর্তারা।

বিস্তারিত

নেপালের চলমান ছাত্র-জনতা আন্দোলনের প্রভাবে সরকার পতনের পর পরিস্থিতি আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ দলের হোটেলের নিকটবর্তী ভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় খেলোয়াড়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যদিও কেউ আহত হয়নি, কিন্তু দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আতঙ্ক প্রকাশ করেছেন। তিনি একটি ভিডিওতে বলেন, “এখানে মনে হয় নিরাপদ না, অন্য কোথাও যাবো কিনা ভাবছি।”

অগ্নিসংযোগের সাথে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও বিক্ষোভকারীদের রোষ থামানো যাচ্ছে না।

আন্দোলনের প্রেক্ষাপট

নেপালে কয়েকদিন ধরে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পুনরায় চালুর দাবিতে আন্দোলন চলছে। সরকার ফেসবুক, এক্স (সাবেক টুইটার) এবং ইউটিউবসহ ২৬টি প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। সরকারের এ পদক্ষেপে যুবসমাজের মধ্যে ক্ষোভ তীব্র হয়, এবং বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সরকারি ভবনে আগুন ধরানোর মতো পরিস্থিতিতে।

আগের দিন প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও আগুন ধরানো হয়েছে, পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে আন্দোলনকারীরা অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে। এই কারণে কাঠমান্ডুর বিমান চলাচলও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ দলের অবস্থান

ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলতে নেপালে আসা বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা নিরাপদে হোটেলে অবস্থান করছে। হোটেলের নিরাপত্তা কর্মীরা জানিয়েছেন, হোটেল কমপ্লেক্সের ভিতরে কোনো ধরনের হুমকি নেই। তবে আতঙ্কের কারণে দলের খেলোয়াড়দের মানসিক চাপ বেড়েছে। দলের কোচ ও কর্মকর্তারা খেলোয়াড়দের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।

জামালের প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও বার্তায় আতঙ্ক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি খুবই ভয়ঙ্কর। আমরা সবাই নিরাপদে হোটেলে আছি, তবে পরিস্থিতি কেমন হবে তা বলা মুশকিল।” তিনি আরও যোগ করেছেন যে, দলের নিরাপত্তা নিয়ে কর্মকর্তারা সবরকম পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতার খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও আলোচিত হয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলো এবং ফুটবল সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশ দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আন্তর্জাতিক খেলার পরিবেশও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

পরবর্তী খেলা ও প্রস্তুতি

বাংলাদেশ দল শুক্রবার নেপালে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে। দল এখনও মানসিকভাবে শান্ত না হলেও, কর্মকর্তারা বলছেন যে খেলোয়াড়রা মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে এবং হোটেল ও স্টেডিয়ামের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষণ ও সম্ভাব্য প্রভাব

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা আন্তর্জাতিক খেলাধুলাকেও প্রভাবিত করছে। বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা মানসিক চাপের মধ্যে থাকায় খেলার মানে প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া, আগামী দিনে এ ধরনের ঘটনা দলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সফরের পরিকল্পনায় পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন তৈরি করবে।

নেপালে বাংলাদেশ দলের পাশে ঘটে যাওয়া অগ্নিসংযোগ দেশটির চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার নতুন উদাহরণ। যদিও খেলোয়াড়রা হোটেলে নিরাপদে আছে, আতঙ্ক এখনও কাটেনি। আন্তর্জাতিক ফুটবল এবং বাংলাদেশ দলের পরবর্তী সফরের জন্য পরিস্থিতি মনিটর করা হচ্ছে। পরিস্থিতি কিভাবে নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা কার্যকর হবে, তা এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

এম আর এম – ১২৫৯,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Advertisement
Back to top button