বিশ্ব

গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা: বলছে জাতিসংঘ, নিহত আরও ৫২

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “ইসরায়েল একের পর এক যুদ্ধাপরাধ করছে” এবং গাজার ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা “বিশ্বের বিবেককে নাড়া দিচ্ছে”। তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) জবাবদিহি করার মতো যথেষ্ট কারণ রয়েছে। গত জানুয়ারিতে আদালত ইসরায়েলকে গণহত্যা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিল।

গাজায় নিহত ৫২, ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে শিশুসহ আরও মৃত্যু

গাজা শহরের বাসিন্দাদের “এখনই চলে যেতে” হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় আরও ৫২ জন নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে ৩২ জন গাজা শহরে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে, যাদের মধ্যে দুজন শিশু রয়েছে। ইসরায়েল নিয়মিতভাবে সাহায্য ঠেকানো বা বোমা হামলা করায় এ মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা: ভবন, মসজিদ ও খেলাধুলার মাঠের ক্ষতি

রোববার সকাল থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫০টিরও বেশি ভবন ধ্বংস হয়েছে এবং আরও ১০০টির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল অভিযোগ করেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে বাস্তুচ্যুত পরিবারের শিবিরসংলগ্ন আবাসিক ভবনগুলোতে আঘাত হানছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২০০টিরও বেশি তাঁবু ধ্বংস হয়েছে। তুফাহ এলাকায় ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার অভিযান চলছে। সেখানে ইসরায়েলি বোমায় আজ-জারকা জেলায় ভবন মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। মসজিদ ও খেলাধুলার মাঠও হামলার নিশানায় ছিল।

সাংবাদিকদের ওপর হামলা: ২৫০ জন নিহত

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় প্রায় ২৫০ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, যাদের সবাই ফিলিস্তিনি। ইসরায়েল বিদেশি সংবাদকর্মীদের গাজায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। আধুনিক ইতিহাসে সাংবাদিকদের জন্য এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হতাহতের খবর

অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, উত্তর গাজায় একটি ট্যাংকের নিচে রাস্তায় পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরিত হয়ে তাদের চার সেনা নিহত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উদ্বেগ

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “গাজার ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা বিশ্ববাসীর বিবেককে নাড়া দিচ্ছে”। তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) জবাবদিহি করার মতো যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

গাজার মানবিক পরিস্থিতি: সহায়তা ও পুনর্নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা

গাজায় মানবিক পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো গাজার জনগণের জন্য জরুরি সহায়তা ও পুনর্নির্মাণের আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ফলকার তুর্ক বলেন, “গাজার জনগণের জন্য জরুরি সহায়তা ও পুনর্নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ”।

গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞের ফলে মানবিক সংকট তীব্র হচ্ছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলেছে এবং গাজার জনগণের জন্য জরুরি সহায়তা ও পুনর্নির্মাণের আহ্বান জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

MAH – 12712,  Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Advertisement
Back to top button