বিশ্ব

গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের ওপর ভয়াবহ হামলা

গাজার দক্ষিণ অংশে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডস ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে। খবার সূত্রে জানা গেছে, এই হামলায় ইসরায়েলি সামরিক যানবাহন ও সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

হামলার বিস্তারিত

সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খান ইউনিসের সালাহউদ্দিন সড়কের আশপাশে তাদের যোদ্ধারা ইসরায়েলি সামরিক যানবাহনের ওপর রকেটচালিত গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে কয়েকটি ট্যাঙ্ক এবং সামরিক বুলডোজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গাজা সিটির জায়তুন মহল্লায় এক ইসরায়েলি মেরকাভা ট্যাঙ্ককে ‘ইয়াসিন-১০৫’ শেল দিয়ে আঘাত করার তথ্য পাওয়া গেছে। আল-কাসাম ব্রিগেডস এই হামলার ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে তাদের যোদ্ধারা কার্যক্রমের প্রস্তুতি ও বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে।

অন্যদিকে ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের সশস্ত্র শাখা আল-কুদস ব্রিগেডসও ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে গাজা সিটিতে তাদের মর্টার হামলার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

হামলার প্রেক্ষাপট

ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে গাজা অঞ্চলে ইসরায়েলি বোমা হামলার পর হামাস ও ইসলামিক জিহাদের প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ আরও জোরদার হয়েছে।

পূর্ববর্তী কয়েক মাসে গাজা থেকে ইসরায়েলি সীমান্তে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে, যা ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এই হামলাগুলি মূলত ইসরায়েলি নাশকতা এবং অভিযানকে প্রতিহত করার জন্য গৃহীত প্রতিরক্ষা পদক্ষেপ।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

এই হামলার ফলে গাজা ও ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী এলাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েন করেছে এবং ক্ষেপণাস্ত্র সতর্ক সাইরেন বাজানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলেও প্রভাব পড়েছে। সতর্কতার কারণে কয়েকটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটকে গন্তব্য পরিবর্তন করতে হয়েছে অথবা আকাশে চক্কর দিতে হয়েছে। ফ্লাইটরাডার তথ্য অনুযায়ী, আমস্টারডাম, মিউনিখ, বার্লিন, বোস্টন, নিউইয়র্ক, এথেন্স এবং আবুধাবি থেকে তেল আবিবগামী অন্তত নয়টি বেসামরিক বিমানকে ঘুরিয়ে আনা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো গাজায় অব্যাহত সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা উভয় পক্ষকে সহিংসতা বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সাম্প্রতিক এই হামলা ইসরায়েলি নিরাপত্তা ও বিমান চলাচল ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গাজার এই হামলা একদিকে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ শক্তিকে প্রদর্শন করছে, অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে তাদের নিরাপত্তা কৌশল পুনর্বিবেচনার জন্য বাধ্য করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি

এই সংঘাত অব্যাহত থাকলে গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যে আরও উত্তেজনা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠা ছাড়া উভয় পক্ষের মধ্যে সমাধান হবে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে সমন্বিতভাবে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে।

গাজা অঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতি যে কতটা সংবেদনশীল তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে রয়েছে। সাম্প্রতিক এই হামলা ইসরায়েলি সামরিক সক্ষমতা ও ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ শক্তির মধ্যে সমন্বয়হীনতার প্রমাণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।

এম আর এম – ০৯১৫, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Advertisement
Back to top button