বিশ্ব

গাজ্জায় ইসরাইলি বোমাবর্ষণে নিহত ৫১ ফিলিস্তিনি, আহত ৩৬৯

Advertisement

গাজ্জায় ইসরাইলি হামলা: নিরীহ ফিলিস্তিনিদের মৃত্যু ৫১

গাজ্জা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনী নতুন করে হামলা চালিয়ে অন্তত ৫১ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। শুক্রবার (১৪ আগস্ট) গাজ্জার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। স্থানীয় সংবাদসংস্থা এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে অনেকেই নিরীহ নাগরিক এবং শিশু।

আহতের সংখ্যা বৃদ্ধির alarming হার

শুধু নিহতই নয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬৯ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এতে গাজ্জায় হামলায় মোট আহতের সংখ্যা ১,৫৫,২৭৫ জনে পৌঁছেছে। আহতদের মধ্যে নারী, শিশু এবং বৃদ্ধ রয়েছে, যাদের অধিকাংশের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ত্রাণ কার্যক্রমেও প্রাণহানি

ইসরাইলি আক্রমণের কারণে ত্রাণ কার্যক্রমও থেমে নেই। মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে অন্তত ১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ২৫০ জন আহত হয়েছেন। এভাবে, ২৭ মে থেকে ত্রাণ কার্যক্রমে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ১,৮৯৮ জনে দাঁড়িয়েছে এবং আহতের সংখ্যা ১৪,১১৩ জনেরও বেশি

অনাহার ও অপুষ্টি: শিশুদের মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি

গাজ্জায় চলমান অবরোধ ও খাদ্য সংকটের কারণে অনাহার ও অপুষ্টিতে মারা গেছে এক মেয়ে শিশু। এর ফলে অনাহারে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৪০ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ১০৭ জন শিশু। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, যদি অবরোধ অব্যাহত থাকে, শিশু ও গরীবদের জীবন সংকট আরও বৃদ্ধি পাবে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা: উদ্বেগ প্রকাশ

ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে সংযুক্ত জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, গাজ্জায় চলমান পরিস্থিতি একটি “মানবিক বিপর্যয়” এবং অবিলম্বে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের প্রয়োজন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালেও আক্রমণ

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইসরাইলি বোমা হামলা শুধুমাত্র আবাসিক এলাকা নয়, হাসপাতাল, স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়কেও লক্ষ্যবস্তু করেছে। এতে শিক্ষার্থী ও চিকিৎসাকর্মীরাও আহত ও নিহত হয়েছেন।

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি: গাজ্জার দুঃখজনক বাস্তবতা

গাজ্জা, যা ফিলিস্তিনের একটি ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল, ইতিমধ্যেই বহু বছর ধরে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু। প্রতি নতুন আক্রমণে স্থানীয় জনগণকে দারিদ্র্য, খাদ্য সংকট এবং নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়তে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ ব্যতীত এই মানবিক সংকট দূর করা কঠিন।

স্থানীয় নাগরিকদের অভিজ্ঞতা

স্থানীয় নাগরিকরা জানিয়েছেন, তারা প্রতিদিন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। “আমরা রাতের অন্ধকারে শুতে পারি না, প্রতিটি বিস্ফোরণের শব্দ আমাদের হৃদয় ভেঙে দেয়,”—মৃত্যুর শোককে প্রকাশ করতে গিয়ে একজন স্থানীয় বাসিন্দা বললেন।

শিশু ও নারীদের অবস্থা: বিশেষ চ্যালেঞ্জ

গাজ্জার শিশু ও নারী বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। শিশুদের মধ্যে অনেকেই মানসিক ট্রমা ভোগ করছে এবং স্বাস্থ্যসেবা অভাবে তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। নারীরা ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নিলেও হামলার শিকার হচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক চাপ এবং কূটনৈতিক পদক্ষেপ

ইসরাইলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিভিন্ন বিবৃতি প্রদান করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, “নিরীহ নাগরিকদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।”

আগামী দিনের অন্ধকার: মানবিক সংকট গভীর

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, যদি ইসরাইলি অবরোধ অব্যাহত থাকে এবং ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা থাকে, গাজ্জার শিশু ও অসহায় মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়বে। খাদ্য, পানি ও স্বাস্থ্যসেবা অভাবে এই সংকট আরও গভীর হবে।

গাজ্জায় ইসরাইলি হামলা ও ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান নির্যাতন একটি মানবিক বিপর্যয় রূপ নিয়েছে। নিহত, আহত এবং অনাহারে মৃত্যু যেন নতুন রেকর্ড স্থাপন করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবিলম্বে হস্তক্ষেপ, মানবিক সহায়তা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা ছাড়া গাজ্জার মানুষদের জীবন রক্ষা করা সম্ভব নয়।

MAH – 12344 ,  Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button