বিশ্ব

কোভিডের পরে নতুন হুমকি এইচএমপিভি (HMPV): কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

করোনা মহামারির রেশ কাটতে না কাটতেই চিনে নতুন ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটেছে। হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) নামে এই ভাইরাস এখন চিন ও প্রতিবেশী দেশ হংকংয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যদিও ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল’ (এনসিডিসি)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ভাইরাস নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে কেরল স্বাস্থ্য দফতর জনসাধারণকে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে।

কী এই এইচএমপিভি (HMPV)?

এইচএমপিভি একটি শ্বাসযন্ত্রজনিত ভাইরাস যা হাঁচি-কাশির মাধ্যমে দ্রুত ছড়ায়। আমেরিকার ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল’ (সিডিসি)-এর মতে, এই ভাইরাসের দুটি প্রজাতি শনাক্ত হয়েছে— ‘এইচএমপিভি-এ’ ও ‘এইচএমপিভি-বি’। প্রতিটি প্রজাতির আবার চারটি ভিন্ন ভাগ রয়েছে— এ১, এ২, বি১ এবং বি২। যদিও চিনে ঠিক কোন প্রজাতি ছড়িয়েছে তা এখনও জানা যায়নি।

ভাইরাসের লক্ষণ

এইচএমপিভি সাধারণত শ্বাসযন্ত্রকে আক্রমণ করে। প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • জ্বর
  • হাঁচি-কাশি
  • গলা ব্যথা
  • শ্বাসকষ্ট

শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাযুক্ত ব্যক্তিরা এই ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হতে পারেন।

সতর্কতামূলক ব্যবস্থা

কেরল স্বাস্থ্য মন্ত্রক HMPV (এইচএমপিভি) ঠেকাতে নিম্নলিখিত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে:

  1. মাস্ক ব্যবহার: জনবহুল স্থানে এবং বাড়ির বাইরে গেলে মাস্ক পরুন। বিশেষ করে বয়স্ক এবং অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  2. হাত ধোয়ার অভ্যাস: খাবার খাওয়ার আগে, চোখে-মুখে হাত দেওয়ার আগে ভালোভাবে সাবান ও জল দিয়ে হাত ধুতে হবে।
  3. সর্দি-কাশি উপেক্ষা নয়: সাধারণ ঠান্ডা, জ্বর বা কাশির মতো উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

করোনা এবং এইচএমপিভি (HMPV)

যদিও এইচএমপিভি এবং করোনাভাইরাস এক নয়, তবুও উভয়ের মধ্যে কিছু মিল রয়েছে।

  1. শ্বাসযন্ত্রের আক্রমণ: দু’টি ভাইরাসই শ্বাসযন্ত্রে প্রভাব ফেলে।
  2. ছোঁয়াচে স্বভাব: সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
  3. উপসর্গের সাদৃশ্য: প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে জ্বর, হাঁচি-কাশি এবং গলা ব্যথা রয়েছে।

ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের পদক্ষেপ

কেরল সরকার জনগণকে সচেতন করতে বিভিন্ন প্রচারমূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

এইচএমপিভি (HMPV) বর্তমানে চিন ও হংকংয়ে সীমাবদ্ধ থাকলেও ভারতের মতো জনবহুল দেশে এর সংক্রমণ রোধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনসচেতনতা বাড়ানো এবং সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলার মাধ্যমেই এই ভাইরাসের প্রকোপ রোধ করা সম্ভব। মাস্ক পরা, হাত ধোয়া এবং উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার মতো সাধারণ অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা সবাই মিলে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারি।

Latest News Of Signalbd.com

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button