বিশ্ব

আয়াতুল্লাহ খামেনি নিজেই যুদ্ধকক্ষ থেকে লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন: ইরানি স্পিকার

Advertisement

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলায় সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সরাসরি নেতৃত্বে পরিচালিত হয় সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা। মাত্র ১২ দিনের মধ্যেই ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতিতে যেতে বাধ্য হয়।

খামেনির সরাসরি ভূমিকা

ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকার বলেন, ইসরায়েলের আকস্মিক বিমান হামলার পরপরই সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি নিজের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী পাল্টা প্রতিক্রিয়ার নকশা তৈরি করেন।
তিনি বলেন, “হামলার ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যেই নতুন সেনা কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়। খামেনি নিজে তাদের তলব করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন ও যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠান।”
এই পুরো প্রক্রিয়া যুদ্ধকক্ষ থেকেই তদারকি করেন খামেনি।

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত

গত ১৩ জুন ভোরে ইরানের বিভিন্ন স্থানে আকস্মিকভাবে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে নিহত হন ইরানের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের পাল্টা হামলা ঠেকাতেই এই অপারেশন চালায় তেল আবিব। তবে বাস্তবে যা ঘটেছে, তা ছিল ইসরায়েলের কল্পনার বাইরে।
এই পরিস্থিতিতে খামেনি যুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ১৯৮০’র দশকে ইরাক-ইরান যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন।

ইরানের প্রতিক্রিয়া: পরিকল্পিত ও কার্যকর হামলা

ইরান ইসরায়েলের বিভিন্ন কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে পাল্টা হামলা চালায়। এতে মোসাদ সদর দপ্তর, আমান সামরিক গোয়েন্দা ইউনিট, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও তেল শোধনাগারসহ অন্তত ৫টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে প্রায় ৯০% সঠিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে বলে দাবি করেন স্পিকার কালিবাফ।

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র বাধ্য হয় পিছু হটতে

ইরানের এ সফল প্রতিক্রিয়ায় যুদ্ধ মাত্র ১২ দিনের মধ্যেই থেমে যায়।
কালিবাফ বলেন, “ইসরায়েল ও ওয়াশিংটন কোনো নমনীয়তার কারণে নয়, বরং পরাজয়ের আশঙ্কায় যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়।”
এছাড়া, ইরানের পাল্টা জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের কাতার ঘাঁটিতেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়, যার মধ্যে অন্তত একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্ট্রাকচার ধ্বংস হয়।

নতুন এক সামরিক যুগে ইরান?

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনাটি ইরানের সামরিক নেতৃত্ব ও কৌশলগত সক্ষমতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
একজন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, “তেল আবিবের এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল ক্ষেপণাস্ত্রের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটাই ইরানের পরিকল্পনার শক্ত প্রমাণ।”
আন্তর্জাতিক মহল এখন নতুন করে ইরানের সামরিক সক্ষমতা ও নেতৃত্ব বিশ্লেষণ করতে শুরু করেছে।

“খামেনির নির্দেশেই মাত্র ১২ দিনের মধ্যে যুদ্ধ থেমে গেছে। তিনি যুদ্ধকক্ষ থেকে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন।” — মোহাম্মদ বাঘের কালিবাফ, স্পিকার, ইরান পার্লামেন্ট

সারসংক্ষেপ  

সম্প্রতি ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরানের প্রতিক্রিয়া বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এবার সেই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে উঠে এসেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ইরানি পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাঘের কালিবাফ জানান, খামেনি যুদ্ধকক্ষ থেকেই পুরো অপারেশনের নেতৃত্ব দেন এবং সরাসরি কমান্ড দেন সেনাবাহিনীকে।

আয়াতুল্লাহ খামেনির নেতৃত্বে ইরান শুধু প্রতিক্রিয়া দেখায়নি, বরং কৌশলগতভাবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে কোণঠাসা করে ফেলে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পাল্টা প্রতিক্রিয়া বিশ্ব রাজনীতির এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।

 এম আর এম – ০৩১০, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button