যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে প্রাণঘাতী বন্যা, ১৩ জন নিহত, নিখোঁজ ২০ শিশু

টেক্সাসের কারভিলে আকস্মিক বন্যা, প্রাণহানি ও শিশু নিখোঁজের ঘটনায় চাঞ্চল্য
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের কারভিল (Carville) এলাকায় ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন ২০ জন শিশু, যারা গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করছিলো। টেক্সাস প্রশাসন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে এবং স্থানীয় জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে ত্বরিত নির্দেশ প্রদান করেছে।
শনিবার, ৫ জুলাই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির (BBC) প্রতিবেদনে বলা হয়, মাত্র ৪৫ মিনিটের মধ্যে গুয়াদালুপে নদীর পানি প্রায় ২৬ ফুট (৮ মিটার) বৃদ্ধি পাওয়ায় এই আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়। নদীর জলস্তর দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় নদী সংলগ্ন ঘরবাড়ি, সড়কপথ ও অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু এলাকা পানিতে ডুবে গেছে এবং যানবাহন পানির স্রোতে ভেসে গেছে।
মৃত ও নিখোঁজের সংখ্যা:
স্থানীয় শেরিফ কার্যালয় জানায়, এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হলেও হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। বন্যা কবলিত এলাকায় থাকা কমপক্ষে ২০ শিশু নিখোঁজ রয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি ও উদ্ধার কার্যক্রম তীব্র গতিতে চলছে।
উদ্ধার অভিযান জোরদার:
টেক্সাস লেফটেন্যান্ট গভর্নর ড্যান প্যাট্রিক বলেছেন, নিখোঁজ শিশুদের সন্ধানে দ্রুত ও ব্যাপক উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে। শিশুদের মধ্যে অনেকেই গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করছিলো এবং বন্যার সময় তারা হঠাৎ পানির স্রোতে আটকা পড়ে থাকতে পারে। যদিও তাদের মরদেহ পাওয়া যায়নি, প্রশাসন আশাবাদী তারা বেঁচে থাকতে পারে।
উদ্ধারে ১৪টি হেলিকপ্টার, ১২টি ড্রোন ও শতাধিক উদ্ধারকর্মী নিয়োজিত রয়েছে। তারা নদীতে ভেসে যাওয়া এবং গাছের শাখায় আটকা পড়া লোকজনকে উদ্ধারে তৎপর।
প্রশাসনের সতর্কতা ও নির্দেশনা:
টেক্সাস প্রশাসন জরুরি সতর্কতা জারি করেছে। তারা সবার কাছে আবেদন জানাচ্ছে, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে দ্রুত সরতে এবং নিরাপদ আশ্রয়ে আশ্রয় নিতে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, গুয়াদালুপে নদীর পানি ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।
স্থানীয় শেরিফ অফিস জানিয়েছে, নদীর ১০০ গজের মধ্যে কেউ যেন না থাকে, সে জন্য সবাইকে নিরাপদ দূরত্বে যেতে বলা হয়েছে। যেকোনো সময় পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা থাকায় সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
টেক্সাসে বন্যার পেছনের কারণ ও প্রভাব:
গরম মৌসুমে ভারী বৃষ্টিপাত এবং হঠাৎ জলস্তরের দ্রুত বৃদ্ধি এই বন্যার প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রা ও ঘনত্ব বাড়ছে।
টেক্সাসের এই বন্যায় শুধু প্রাণহানি নয়, ব্যাপক সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ বাসস্থান হারিয়েছেন, সড়কপথ বন্ধ হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কৃষিক্ষেত্রেও বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সাহায্য ও প্রতিক্রিয়া:
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে ত্রাণ ও উদ্ধারকারীরা টেক্সাসে পাঠানো হচ্ছে। সরকার প্রশাসন দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক মহল থেকেও মানবিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া যাচ্ছে।
সচেতনতা ও ভবিষ্যতের প্রস্তুতি:
এই ভয়াবহ বন্যা টেক্সাসের জন্য এক শিক্ষা হিসেবে কাজ করবে। জরুরি ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করতে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারকে আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে।
টেক্সাসের কারভিল শহরে হঠাৎ ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু, ২০ শিশু নিখোঁজ। নদীর পানি মাত্র ৪৫ মিনিটে ২৬ ফুট বৃদ্ধি পায়, যা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করেছে। উদ্ধারকারীরা তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে এবং সবাইকে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
আপনার সাইট সিগনালবিডি.কমের জন্য এটি একটি সম্পূর্ণ ও প্রফেশনাল নিউজ রিপোর্ট হবে। প্রয়োজনে আরও তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করে যুক্ত করতে পারেন।