বজ্রসহ ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস

দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বজ্রসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু এলাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত মৌসুমী বায়ু মোটামুটি সক্রিয় রয়েছে। এছাড়া পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যা দেশে অস্থির আবহাওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দেবে।
বিস্তারিত পূর্বাভাস
বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে নিম্নলিখিত বিভাগগুলোতে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা বেশি:
- রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেট: অধিকাংশ জায়গায় বজ্রসহ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি।
- রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল: কিছু কিছু স্থানে বজ্রসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে, রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
লঘুচাপ ও মৌসুমী বায়ুর প্রভাব
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপের সৃষ্টি দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ভারী বর্ষণ ঘটাতে পারে। মৌসুমী বায়ু মোটামুটি সক্রিয় থাকায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
লঘুচাপের ফলে কিছু এলাকায় বাতাসের গতি বেড়ে যেতে পারে, যা নৌপথে যাতায়াত ও কাঁচামালের পরিবহনে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, নদী, খাল ও বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় হঠাৎ জলবৃদ্ধি হতে পারে।
প্রভাব ও প্রস্তুতি
বজ্রসহ ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দেশের কৃষি, রাস্তাঘাট ও দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে নিম্নাঞ্চল, নদীপথের পাড় ও নিম্নভূমি এলাকার মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলে।
সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে প্রস্তুতি নিতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হঠাৎ বৃষ্টির কারণে ছুটি বা কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করার ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। এছাড়া নাগরিকদের কাছে নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ইতিহাস ও পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা
বাংলাদেশে বর্ষার সময় লঘুচাপ বা মৌসুমী বায়ুর কারণে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হওয়া সাধারণ ঘটনা। তবে কখনো কখনো এই ধরনের বর্ষণ দুর্যোগে রূপ নেয়, যেমন নদী ও খালগুলোতে পানি বৃদ্ধি, সড়কে জলাবদ্ধতা এবং বিভিন্ন দুর্ঘটনা।
অতীতের তথ্য অনুযায়ী, ঝড় ও বজ্রসহ ভারী বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাটে যানজট ও ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার ঘটনা বহুবার দেখা গেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে লঘুচাপের কারণে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা থাকতে পারে। তারা নাগরিকদের নির্দেশ দিয়েছেন:
- অস্থির আবহাওয়ায় অপ্রয়োজনীয় বাইরে বের হবেন না।
- নদী ও খাল সংলগ্ন এলাকায় সতর্ক থাকুন।
- বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও খোলা স্থান থেকে দূরে থাকুন।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন, আগামী ৫ দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্থিতিশীল হতে পারে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বজ্রসহ ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তা অনুযায়ী নাগরিকদের অস্থির আবহাওয়ায় সতর্ক থাকা আবশ্যক। এছাড়া প্রশাসন, স্থানীয় সরকার ও নাগরিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে বিপদের প্রভাব কমানো সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, আবহাওয়ার তাজা খবর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া, যাতে বজ্রসহ ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ক্ষতি ও দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
এম আর এম – ১৩০১,Signalbd.com