আবহাওয়া

উত্তাল সাগর, রাতের মধ্যে ৬ জেলায় ঝড়ের শঙ্কা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রাতের মধ্যে দেশের অন্তত ছয় জেলায় দমকা ঝড়ো হাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষত উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেদের মধ্যে।

ঝড়ের সম্ভাবনা নিয়ে সতর্কবার্তা

আবহাওয়া দফতরের সর্বশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, যশোর ও কুমিল্লা অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এর সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

এসব অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

লঘুচাপ

বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রায়ই লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। তবে এবারের লঘুচাপটি সুস্পষ্ট আকার ধারণ করায় উপকূলীয় জেলাগুলোতে এর প্রভাব বেশি পড়ছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এটি পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। ফলে সমুদ্র উপকূল এবং কাছাকাছি জেলাগুলোতে ঝড়ো হাওয়া প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

জেলে ও উপকূলীয় জনগণের শঙ্কা

ঝড়ের পূর্বাভাসে উপকূলীয় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গভীর সাগরে না গিয়ে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সতর্কভাবে চলাচল করতে বলা হয়েছে। অনেক জেলে ইতোমধ্যে নৌকা নিয়ে তীরে ফিরতে শুরু করেছেন।

পটুয়াখালী থেকে আসা এক জেলে বলেন, “সাগরে ঢেউ খুব বেশি, আর বাতাসও জোরে বইছে। আমরা ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরতে যেতে চাই না।”

বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য

আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, লঘুচাপটি তীব্র আকার ধারণ করার সম্ভাবনা কম হলেও সতর্ক না থাকলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। তারা বলছেন, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস হলো মৌসুমি ঝড়-ঝঞ্ঝার সময়, তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে সরকার ও জনগণকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা

বাংলাদেশ প্রায় প্রতিবছরই এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়। কয়েক বছর আগে একই সময়ে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। ফলে স্থানীয় প্রশাসন এবার শুরু থেকেই সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।

সরকারের প্রস্তুতি

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ঝড়ো হাওয়ার শঙ্কা মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক দল ও সিভিল ডিফেন্স সদস্যদের প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নদীবন্দর ও উপকূলীয় এলাকায় বিশেষ সতর্কীকরণ বার্তা প্রচার করা হচ্ছে।

সংক্ষিপ্তসার

বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপ থেকে সৃষ্ট ঝড়ের শঙ্কা আপাতত রাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি যেকোনো সময় পরিবর্তিত হতে পারে। তাই উপকূলীয় জেলাগুলোতে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। আগামী কয়েক ঘণ্টা এই ঝড়ের গতি-প্রকৃতি নির্ধারণ করবে, কতটা ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।

এম আর এম – ১১৬৩, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Advertisement
Back to top button