
দেশের তিনটি অঞ্চলে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটি জানিয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বেশ কিছু এলাকায় আগামী কয়েক দিনে তীব্র বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়ার বিস্তারিত পূর্বাভাস
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং অন্যান্য বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষত খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। দেশের দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য পরিবর্তিত হতে পারে।
শুক্রবার, শনিবার এবং রোববারের পূর্বাভাসেও একই রকম পরিস্থিতি থাকতে পারে। বিশেষ করে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা বিভাগের কিছু কিছু এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
মৌসুমী বায়ুর প্রভাব
মৌসুমী বায়ুর অক্ষ সম্প্রতি শক্তিশালী অবস্থায় রয়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের উপর বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আবহাওয়ার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৌসুমী বায়ুর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
প্রভাবিত এলাকা ও জনজীবন
খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের নিম্নাঞ্চলগুলো বিশেষভাবে প্রভাবিত হতে পারে। জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে এবং সম্ভাব্য বন্যা বা জলাবদ্ধতার ঝুঁকি থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর স্থানীয় জনগণকে সতর্ক থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছে।
পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা
পূর্ববর্তী বছরগুলিতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে একই সময়ে অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে। ২০১৯ সালের আগস্টে খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাত এবং জলাবদ্ধতা দেখা যায়। সেই সময় গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও সেতুতে পানি জমে যোগাযোগের সমস্যাও দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বুঝা যায়, মানুষকে সঠিক সময়ে সতর্ক করা গেলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটা কমানো সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মৌসুমী বায়ু আরও সক্রিয় হওয়ার কারণে দেশের বিভিন্ন অংশে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তারা আরও জানিয়েছেন, নদী-নালা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিকভাবে কাজ করলে বন্যার প্রভাব কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ডা. শহিদুল ইসলাম বলেন, “বর্তমান মৌসুমী বায়ুর গতিবেগ ও আয়তন অতীতের চেয়ে বেশি। তাই সাধারণ মানুষকে পানি জমার আশঙ্কা এবং বৃষ্টি-সহ ঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে হবে।”
পরবর্তী করণীয়
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। স্কুল, কলেজ, অফিস এবং অন্য জনজীবনে প্রভাব পড়তে পারে। তাই জনগণকে অতি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
প্রত্যাশিত বৃষ্টি ও ঝড় মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা চেক করা, জরুরি সহায়তার জন্য প্রস্তুত থাকা এবং মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে।
সমাপ্তি
সংক্ষেপে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের জনগণকে অতি ভারী বর্ষণের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতি কতটা মারাত্মক হতে পারে তা পরবর্তী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার আবহাওয়া তথ্যের ওপর নির্ভর করছে।
এম আর এম – ০৯৮৫, Signalbd.com