যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি নিয়ে টেসলার উদ্বেগ: ইলন মাস্কের নতুন চ্যালেঞ্জ

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি নিয়ে টেসলার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন এই কোম্পানি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণে উদ্বিগ্ন। এই পরিস্থিতিতে, মাস্কের কোম্পানি টেসলা শেয়ার বাজারে চরম চাপে রয়েছে এবং তাদের শেয়ারের দাম গত বছর ৪০ শতাংশ কমে গেছে।
ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও টেসলার উদ্বেগ
টেসলা একটি স্বাক্ষরবিহীন চিঠি মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছে, যেখানে তারা জানিয়েছে, তারা ন্যায্য বাণিজ্যনীতির পক্ষে। তবে, তারা উদ্বিগ্ন যে, অন্যান্য দেশ মার্কিন শুল্কের ‘প্রতিশোধ’ নিলে মার্কিন রপ্তানিকারকদের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এই উদ্বেগের পেছনে রয়েছে ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি, যা চীনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের অংশ।
২০১৮ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর চীন থেকে সব ধরনের পণ্য আমদানির ওপর অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর ফলে, চীন টেসলার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার হয়ে উঠেছে। ফলে, ইলন মাস্ক ট্রাম্প প্রশাসনের অংশ হলেও এই বাণিজ্যযুদ্ধের আঁচ থেকে তিনি বাঁচতে পারছেন না।
টেসলার শেয়ার বাজারের অবস্থা
বিশ্লেষকদের মতে, টেসলার শেয়ারের দাম কমে যাওয়ার পেছনে কোম্পানির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং গত বছর বিক্রি কমে যাওয়ার উদ্বেগ রয়েছে। টেসলা জানিয়েছে, তারা গাড়ি ও ব্যাটারির জন্য স্থানীয় সরবরাহকারীদের খুঁজে বের করতে ব্যবসার নীতিতে কিছু পরিবর্তন আনছে। তাদের লক্ষ্য হলো বিদেশের বাজারের ওপর নির্ভরতা কমানো।
ট্রাম্পের সমর্থন ও মাস্কের অবস্থান
ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি টেসলার গাড়ি কিনেছেন এবং এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি মাস্কের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ট্রাম্প বলেছেন, “বাম কট্টরপন্থী উন্মাদেরা টেসলা বর্জনের চেষ্টা করছে; কিন্তু মাস্কের প্রতি আমার আস্থা ও সমর্থন আছে।” তিনি মাস্ককে সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই) নামে নতুন একটি বিভাগের দায়িত্ব দিয়েছেন, যার মাধ্যমে সরকারের ব্যয় হ্রাস এবং কর্মী সংকোচনের লক্ষ্য নিয়েছেন।
টেসলার ভবিষ্যৎ: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
টেসলার জন্য এই পরিস্থিতি একটি নতুন চ্যালেঞ্জ। শুল্কনীতি পরিবর্তনের ফলে কোম্পানির ব্যবসায়িক মডেল এবং উৎপাদন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনতে হতে পারে। তবে, মাস্কের নেতৃত্বে টেসলা নতুন প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার চেষ্টা করবে।
ইলন মাস্কের টেসলা বর্তমানে একটি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি। মার্কিন শুল্কনীতির পরিবর্তন এবং বাণিজ্যযুদ্ধের প্রভাব তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, মাস্কের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা এবং ট্রাম্পের সমর্থন টেসলাকে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সাহায্য করতে পারে। ভবিষ্যতে টেসলার জন্য কী অপেক্ষা করছে, তা সময়ই বলবে।