ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি: ট্যাংক ও প্রযুক্তি উৎপাদনে জোর, টি-শার্ট নয়

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন যে, তাঁর শুল্কনীতির মূল লক্ষ্য হলো দেশে ট্যাংক, চিপস, কম্পিউটার ও অন্যান্য প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন বাড়ানো। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, “আমরা এখানে জুতা আর টি-শার্ট বানাতে চাইছি না। আমরা সামরিক সরঞ্জাম বানাতে চাই। বড় বড় জিনিস বানাতে চাই। আমরা কম্পিউটার দিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি তৈরি করতে চাই।”
টেক্সটাইল শিল্প নিয়ে বিতর্ক
ট্রাম্পের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট গত ২৯ এপ্রিল মন্তব্য করেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সটাইল শিল্পে বড় ধরনের প্রসার অপরিহার্য নয়। এই মন্তব্যের পর ন্যাশনাল কাউন্সিল অব টেক্সটাইল অর্গানাইজেশনস অর্থমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করে। ট্রাম্প এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, “সত্যি বলতে, আমি টি-শার্ট বা মোজা বানাতে চাই না। এসব আমরা অনায়াসেই অন্য জায়গায় তৈরি করতে পারি। আমরা যা তৈরি করতে চাই, তা হলো চিপস, কম্পিউটার আরও অনেক কিছু—ট্যাংক ও জাহাজও।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর শুল্কের হুমকি
ট্রাম্প আগামী ১ জুন থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।** তিনি বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করছে না। তাই আমরা তাদের পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করব।”
অ্যাপলের ওপর শুল্কের সম্ভাবনা
ট্রাম্প অ্যাপলকে সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তারা বিদেশ থেকে যেসব আইফোন কিনছেন, সেগুলোর ওপরও তিনি ২৫ শতাংশ শুল্ক বসাতে পারেন।** এই ঘোষণার পর চীনে অ্যাপলের সরবরাহকারীদের শেয়ারের দাম কমে গেছে।
বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের এই শুল্কনীতির ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। চীন বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের এই একতরফা শুল্কনীতির বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে।
বিশ্লেষকদের মতামত
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদের জন্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে এবং বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য সম্পর্ককে জটিল করে তুলবে। তবে ট্রাম্পের মতে, এই নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বাড়বে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতকে সামরিক ও প্রযুক্তি পণ্যের দিকে কেন্দ্রিত করতে চায়। এই নীতির ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীনসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক উত্তপ্ত হতে পারে। বিশ্লেষকরা এই নীতির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন।