বাজারে এল মিতসুবিশির নতুন এক্সপ্যান্ডার সিরিজের চার মডেল

মিতসুবিশির নতুন যুগে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের অটোমোবাইল শিল্পে নতুন এক ধাপ এগিয়ে গেল মিতসুবিশি মোটরস। এবার বিশ্বখ্যাত এই ব্র্যান্ডের চারটি নতুন মডেলের গাড়ি দেশেই সংযোজন করেছে পরিবেশক প্রতিষ্ঠান র্যানকন।
শনিবার (৩ মে ২০২৫) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যানকন জানায়, এই গাড়িগুলো মিতসুবিশির জনপ্রিয় এক্সপ্যান্ডার সিরিজের অংশ।
মডেলগুলো হলো:
- এক্সপ্যান্ডার ক্ল্যাসিক
- এক্সপ্যান্ডার প্রিমিয়াম
- এক্সপ্যান্ডার ইকো
- এক্সপ্যান্ডার স্পোর্ট
এর মধ্যে তিনটি মডেল ইতিমধ্যে ঢাকা মোটর শোতে প্রদর্শিত হয়েছে।
এক্সপ্যান্ডার সিরিজের বৈশিষ্ট্য
এই চারটি মডেলেই রয়েছে মিতসুবিশির বিশ্বমানের প্রযুক্তি ও আকর্ষণীয় ডিজাইন। সংক্ষেপে প্রতিটি মডেলের বিশেষ ফিচার তুলে ধরা হলো:
এক্সপ্যান্ডার ক্ল্যাসিক ও প্রিমিয়াম
- প্রিমিয়াম লেদার সিট
- হুড এমব্লেম (গাড়ির সামনের অংশে ব্র্যান্ড চিহ্ন)
- রুফ রেইল (ছাদে বহনযোগ্য বক্স স্থাপন সুবিধা)
- রেইন ভাইজর (বৃষ্টিতে জানালা খোলা রাখার প্রযুক্তি)
- ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা ভিউ
- ইনবিল্ট অ্যান্ড্রয়েড প্লেয়ার
এক্সপ্যান্ডার স্পোর্ট
- ইন্টিগ্রেটেড বডি কিট (স্পোর্টি ও অ্যারোডায়নামিক ডিজাইন)
- প্রিমিয়াম লেদার সিট
- ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলের ক্যামেরা
এক্সপ্যান্ডার ইকো
- বিশেষভাবে জ্বালানিসাশ্রয়ী ডিজাইন
- পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি
- সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী অপশন খোঁজার জন্য উপযুক্ত
মূল্য ও ক্রয়প্রক্রিয়া
এক্সপ্যান্ডার সিরিজের গাড়ির মূল্য ধরা হয়েছে ৩৪ লাখ থেকে ৪০ লাখ টাকার মধ্যে, মডেল ও ফিচার অনুযায়ী ভিন্নতা রয়েছে।
ক্রেতারা চাইলে র্যানকনের শোরুম থেকে অগ্রিম বুকিং দিতে পারবেন। র্যানকন জানিয়েছে, স্থানীয়ভাবে সংযোজনের ফলে গাড়িগুলোর দাম অন্যান্য আমদানিকৃত গাড়ির তুলনায় কম রাখা সম্ভব হয়েছে।
মিতসুবিশির এই পদক্ষেপের তাৎপর্য
স্থানীয় সংযোজন = মূল্য সাশ্রয় + কর্মসংস্থান
এখন থেকে গাড়ি আমদানির উপর নির্ভরতা কমবে। দেশেই সংযোজনের ফলে:
- বিনিয়োগ ও কারখানা তৈরি হচ্ছে
- প্রযুক্তি স্থানান্তর ঘটছে
- স্থানীয় জনবল প্রশিক্ষণের সুযোগ তৈরি হচ্ছে
বাংলাদেশের বাজারে বৈচিত্র্য
পূর্বে গাড়ি বাজারে জাপানি রিকন্ডিশনড গাড়ির আধিপত্য ছিল। কিন্তু নতুন মডেল ও ব্র্যান্ড এন্ট্রির ফলে:
- ক্রেতারা নতুন গাড়ির বিকল্প পাচ্ছেন
- উন্নত ফিচারসহ গাড়ি এখন আরও সহজলভ্য
র্যানকনের নেতৃত্বের মন্তব্য
র্যাংগস লিমিটেডের সিইও মোহাম্মদ হামদুর রহমান বলেন:
“মিতসুবিশি সব সময়ই একটি নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ড। এবার এক্সপ্যান্ডার স্থানীয়ভাবে সংযোজনের ফলে বাংলাদেশের বাজারে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। ক্রেতারা এখন কম খরচে বিশ্বমানের গাড়ি পাবেন।”
অটো ডিভিশনের ডিরেক্টর শোয়েব আহমেদ বলেন:
“আমরা বাংলাদেশের অটোমোবাইল–শিল্পে নতুন যুগের সূচনা করছি। ভবিষ্যতে আরও মডেল সংযোজন করে এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।”
বাংলাদেশের অটো শিল্পে নতুন দিগন্ত
মিতসুবিশির এই নতুন পদক্ষেপকে দেশের অটোমোবাইল বিশ্লেষকরা একটি গেমচেঞ্জার সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন। আগে শুধু জাপানি রিকন্ডিশন্ড বা ভারতের সাশ্রয়ী গাড়ির ওপর নির্ভরতা ছিল। কিন্তু এখন:
- নিজস্ব ব্র্যান্ড সংযোজন
- কারখানা তৈরি ও উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো
- বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি
এসব বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা ও অর্থনৈতিক সক্ষমতার প্রতিফলন।
মিতসুবিশি এক্সপ্যান্ডার সিরিজ – কেন বিশেষ?
ফিচার | সুবিধা |
---|---|
৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা | নিরাপদ পার্কিং ও ড্রাইভিং |
লেদার সিট | আরামদায়ক ও প্রিমিয়াম অভিজ্ঞতা |
জ্বালানিসাশ্রয়ী মডেল | পরিবেশবান্ধব ও কম খরচ |
রুফ রেইল | দীর্ঘ ভ্রমণে অতিরিক্ত লাগেজ বহন |
ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম | অ্যান্ড্রয়েড প্লেয়ারসহ স্মার্ট ড্রাইভ |
বাংলাদেশে সংযোজিত মিতসুবিশির এক্সপ্যান্ডার সিরিজের চারটি মডেল শুধুমাত্র একটি পণ্য নয়, বরং এটি দেশের অটোমোবাইল শিল্পে নতুন যুগের সূচনা। প্রযুক্তি, আরাম, পরিবেশ সচেতনতা এবং মূল্য–এই চারটি দিকেই এই সিরিজ প্রতিযোগিতায় এগিয়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি স্থানীয় সংযোজন অব্যাহত থাকে এবং আরও নতুন মডেল আসে, তবে বাংলাদেশ শুধু গাড়ি আমদানিকারক দেশ নয়, বরং প্রযুক্তি ও শিল্পে এগিয়ে থাকা দেশ হিসেবে পরিণত হতে পারবে।