প্রযুক্তি

ভিনগ্রহের প্রাণীদের হাতে সোভিয়েত সেনা পাথরে রূপান্তরিত

স্নায়ুযুদ্ধের উত্তেজনাপূর্ণ সময়কাল ঘিরে এক রহস্যজনক ও রোমহর্ষক ঘটনার বিবরণ উঠে এসেছে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর (CIA) একটি গোপন নথিতে। ইউক্রেনের আকাশে ইউএফও বা অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তুর সঙ্গে সোভিয়েত সেনাদের এক সংঘর্ষের বর্ণনা রয়েছে এই নথিতে, যার পরিণতিতে এক ভয়ংকর ঘটনার জন্ম হয় বলে দাবি করা হয়েছে।

সিআইএর সদ্য ভাইরাল হওয়া এই নথিতে বলা হয়েছে, সোভিয়েত সেনারা একটি ইউএফও লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। ইউএফওটি ভূপাতিত হওয়ার পর এর মধ্য থেকে কিছু অদ্ভুতদর্শন ভিনগ্রহের প্রাণী বেরিয়ে আসে। এরপর তারা একত্রিত হয়ে একটি গোলাকৃতি বস্তুর রূপ নেয় এবং তীব্র আলোক বিস্ফোরণের মাধ্যমে ২৩ জন সোভিয়েত সেনাকে পাথরে পরিণত করে দেয়।

ঘটনাটি কীভাবে ফাঁস হলো?

এই নথিটি সিআইএর কাছে আসে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর। কেজিবি (সাবেক সোভিয়েত গোয়েন্দা সংস্থা) কর্তৃক তৈরি করা ২৫০ পৃষ্ঠার একটি গোপন প্রতিবেদন সিআইএর হাতে আসে, যাতে ইউক্রেনের একটি সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ঘটে যাওয়া এই অদ্ভুত ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।

সিআইএ ২০০০ সালে নথিটি প্রথমবার প্রকাশ করে। তবে সম্প্রতি এই নথি নতুন করে আলোচনায় এসেছে যখন এটি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় এবং জনপ্রিয় ‘দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্স’ পডকাস্টেও এই নিয়ে আলোচনা হয়।

কী ছিল সেই রহস্যজনক ঘটনার বিবরণ?

প্রতিবেদনের বর্ণনা অনুযায়ী, ইউক্রেনে সামরিক প্রশিক্ষণে নিয়োজিত সোভিয়েত সেনারা একটি অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তুকে (UFO) খুব নিচু দিয়ে উড়তে দেখে। সেটি বারবার তাদের মাথার ওপর দিয়ে ঘোরাঘুরি করছিল। এরপর সেনাদের একজন ভূমি থেকে আকাশে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বস্তুটিকে ভূপাতিত করেন।

ভূপাতিত হওয়ার পর সেই যান থেকে বেরিয়ে আসে পাঁচটি অদ্ভুতদর্শন প্রাণী—তাদের মাথা ছিল বড়, চোখ ছিল বিশাল কালো। প্রত্যক্ষদর্শী সেনাদের মতে, প্রাণীগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত যানটির ধ্বংসাবশেষের কাছে জড়ো হয়ে একত্রিত হয় এবং হঠাৎ করেই তারা একত্রে মিশে একটি বড়সড় গোলাকৃতি আলোকিত বস্তুতে পরিণত হয়।

মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই সেই গোলকটি ব্যাপক আকার ধারণ করে এবং প্রচণ্ড আলোর বিকিরণ ঘটায়। এর ফলে সেসময় ঘটনাস্থলে থাকা ২৩ জন সোভিয়েত সেনা পাথরের মূর্তিতে রূপান্তরিত হন বলে দাবি করা হয়েছে।

বেঁচে গিয়েছিলেন মাত্র দুজন

প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাত্র দুজন সেনা ঘটনাস্থল থেকে জীবিত ফিরে আসেন। কারণ তারা একটি ভবনের ছায়ায় অবস্থান করছিলেন এবং সরাসরি আলো বিকিরণের মুখে পড়েননি। পরবর্তীতে তাঁরা পুরো ঘটনার বিবরণ দেন কেজিবির তদন্ত দলকে।

এরপর কী হয়েছিল?

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, কেজিবি দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তারা ইউএফওর ধ্বংসাবশেষ এবং পাথর হয়ে যাওয়া সেনাদের দেহ নিজেদের হেফাজতে নেয় এবং তা মস্কোর উপকণ্ঠে একটি গোপন সামরিক গবেষণা ঘাঁটিতে পাঠানো হয়।

এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করা কঠিন হলেও, সিআইএর প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়, “যদি কেজিবির প্রতিবেদন সত্য হয়, তাহলে এটি ভিনগ্রহের প্রাণীদের অস্ত্র ও প্রযুক্তির এক ভয়ংকর ইঙ্গিত দেয়। তাদের কাছে এমন প্রযুক্তি রয়েছে, যা আমাদের জ্ঞানের পরিসীমার বহু বাইরে।”

UFO প্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল

ঘটনার সত্যতা নিয়ে যত বিতর্কই থাকুক না কেন, UFO গবেষক ও অ্যালিয়েন বিশ্বাসীদের মধ্যে এই নথিটি ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তাঁদের অনেকে এই ঘটনাকে “ইতিহাসে মানুষের সঙ্গে ভিনগ্রহের প্রাণীর সরাসরি সংঘর্ষের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর প্রমাণ” হিসেবে দেখছেন।

তবে বিজ্ঞানীদের অনেকেই এটিকে অবাস্তব এবং প্রচলিত UFO ষড়যন্ত্র তত্ত্বের অংশ হিসেবে উড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁদের মতে, এটি হয়তো প্রোপাগান্ডা, হয়তো ভুল ব্যাখ্যা, কিংবা সম্পূর্ণরূপে কল্পনালব্ধ গল্পও হতে পারে।

এক নজরে ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ:

বিষয়বিবরণ
সময়কালস্নায়ুযুদ্ধ পর্ব (১৯৮০-এর দশক অনুমান)
স্থানইউক্রেন, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন
ইউএফওর অবস্থাক্ষেপণাস্ত্রে বিধ্বস্ত
প্রাণীর সংখ্যা৫টি, বড় মাথা ও বড় কালো চোখওয়ালা
ঘটনাক্রমপ্রাণীরা একত্রে মিশে গোলক আকৃতি ধারণ করে, বিস্ফোরণ ঘটায়
ফলাফল২৩ জন সোভিয়েত সেনা পাথরে রূপান্তরিত
বেঁচে যাওয়া২ জন, ছায়ায় থাকার কারণে
তদন্তকেজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে সব সংগ্রহ করে মস্কোতে পাঠায়

সিআইএর নথিতে এমন এক ঘটনার বিবরণ উঠে এসেছে, যা রীতিমতো সাই-ফাই সিনেমার কাহিনিকেও হার মানায়। যদিও এর বাস্তবতা নিয়ে বিতর্ক থেকেই যাচ্ছে, তবে UFO ও ভিনগ্রহের প্রাণী সংক্রান্ত আলোচনায় এটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

আপনি কি বিশ্বাস করেন, মানুষ ছাড়া অন্য কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী আমাদের মহাবিশ্বে রয়েছে? সোভিয়েত সেনাদের সেই ভয়ঙ্কর পরিণতি যদি সত্যিই ঘটে থাকে, তাহলে হয়তো আমাদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ভাবনার মৌলিক পরিবর্তন দরকার!

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button